বিরোধীদের পুরনো মামলা সক্রিয় করার উদ্যোগ: তথ্য পাঠাতে সারা দেশে নির্দেশনা
এসব মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে সারা দেশে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি দেখভালের জন্য পুলিশ সদর দপ্তর একটি কমিটিও করেছে।
প্রথম নিউজ, ডেস্ক: বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া পুরনো মামলাগুলো সক্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এসব মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে সারা দেশে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি দেখভালের জন্য পুলিশ সদর দপ্তর একটি কমিটিও করেছে। ইতিমধ্যে এই কমিটি একাধিক বৈঠক করেছে। এছাড়া মামলার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ তদারকি করতে রেঞ্জ ও মেট্রোপলিটন ইউনিটেও কমিটি গঠন করেছে পুলিশ।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়- ঢাকাসহ সারা দেশে ১ হাজার ৩০০ মামলা রয়েছে যেগুলো নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতার। মামলাগুলোর বেশির ভাগের বাদী পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন থানায় ১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির পরে এমন ২৫টি মামলা হয়। আর ১৩ সালে দায়ের হয়েছিল ১৫ মামলা। এসব মামলায় বিরোধী দলগুলোর শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ লাখো নেতাকর্মী আসামি।
গত ২২শে জুন পুলিশ সদর দপ্তরের এডিশনাল ডিআইজি জেসমিন বেগম স্বাক্ষরিত চিঠিতে রেঞ্জ ও মেট্রোপলিটন ইউনিটে এ সংক্রান্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেয়া হয়। চিঠির বিষয় উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে অগ্নিসন্ত্রাস, গুরুতর অপরাধ ও পুলিশ সদস্য হত্যার ঘটনায় রুজুকৃত গুরুত্বপূর্ণ মামলা মনিটরিং সংক্রান্তে কমিটি গঠন প্রসঙ্গে।
বলা হয়, উপযুক্ত বিষয়ে জানানো যাচ্ছে যে, ২০১৩ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে অগ্নিসন্ত্রাস, গুরুতর অপরাধ ও পুলিশ সদস্য হত্যা, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মামলার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করা ও বিচারকার্য দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে রেঞ্জ ও মেট্রোপলিটন পুলিশ ইউনিট পর্যায়ে অতিরিক্ত ডিআইজি/অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার/যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করতে বলা হলো। চিঠিতে বলা হয়, নিজ অধিক্ষেত্রে সংযুক্ত তালিকার অতিরিক্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলাসমূহ নির্বাচন করা; মামলার সর্বশেষ অবস্থা পর্যালোচনা করা এবং তদন্তাধীন থাকলে দ্রুত ও সঠিক তদন্ত সম্পন্ন করে নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা, বিচারাধীন মামলার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত গৃহীত সাক্ষ্য পর্যালোচনা করা; সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়নি এমন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী খুঁজে বের করে দ্রুত সাক্ষ্যগ্রহণের বিষয়ে প্রসিকিউশন ও আদালতের সঙ্গে সমন্বয় করা। সাক্ষ্যগ্রহণের আগে সাক্ষীদের যথাযথ ব্রিফ করা। স্থগিত মামলাসমূহের ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা। যে সকল মামলার বিচারে আসামিরা খালাস পেয়েছে, সেই সব মামলার মেরিট পর্যালোচনা করে আপিলের উদ্যোগ নেয়া। রেঞ্জ/ইউনিটের ফোকাল পয়েন্টের মাধ্যমে ১৫ দিন পর পর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে মামলার সর্বশেষ অবস্থার তথ্য প্রেরণ নিশ্চিত করা।
নির্দেশনার সূত্র ধরে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তরে ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) জয়দেব কুমার ভদ্রের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে রেঞ্জ ও মেট্রোপলিটন ইউনিটের প্রতিনিধিরা নিজেদের সংগ্রহ করা তথ্য উপস্থাপন করেন পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানিয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) জয়দেব কুমার ভদ্র গতকাল জানান, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির আগে ও পরে যে মামলা হয়েছে ওই মামলাগুলোর তদন্ত কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটি ইতিমধ্যে কাজও শুরু করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন অতিরিক্ত কমিশনার জানান, চিঠি ২২শে জুন পুলিশ সদর দপ্তরের চিঠিটি পেয়েছেন। মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি ও আদালতের আদেশে যে মামলা স্থগিত রয়েছে সেগুলোকে পুনরায় চালু করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে ডিএমপিতে থাকা ১৩ টি মামলার তথ্য পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।