Ad0111

ব্যাংকে থাকা শত কোটি টাকার কোনো দাবিদার নেই

ব্যাংকে টাকা জমা আছে কিন্তু ১০ বছর ওই আমানতের দাবিদার না থাকলে সেটাকে ‘আনক্লেইমড ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট’ (অদাবিকৃত অর্থ) হিসেবে গণ্য করা হয়।

ব্যাংকে থাকা শত কোটি টাকার কোনো দাবিদার নেই
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ,ঢাকা: সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে দাবিহীন আমানত হিসাবে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে বছরের পর জমা রয়েছে বিপুল পরিমাণ টাকা। মালিক না পাওয়া এসব অ্যাকাউন্টের টাকার পরিমাণ হাজার বা লাখ নয়, ছাড়িয়ে গেছে শত কোটি টাকা। কোনো ব্যাংকে টাকা জমা আছে কিন্তু ১০ বছর ওই আমানতের দাবিদার না থাকলে সেটাকে ‘আনক্লেইমড ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট’ (অদাবিকৃত অর্থ) হিসেবে গণ্য করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী ওই অ্যাকাউন্টের অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা করার নির্দেশনা রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয় ১৫ কোটি ২১ লাখ ৩০ হাজার টাকার অদাবিকৃত অর্থ। এর পর ২০১৮ সালে জমা পড়ে ১০ কোটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার, ২০১৯ সালে ১০ কোটি ৪৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা, ২০২০ সালে ৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৩৩ হাজার এবং সবশেষ ২০২১ সালে দাবিহীন আমানত থেকে জমা হয় ৩৭ কোটি ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর বাংলাদেশ ব্যাংকের সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া অদাবিকৃত অর্থের পরিমাণ ১০৮ কোটি ১৮ লাখ ২২ হাজার ৫০৩ টাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ১০ বছরের বেশি সময় পড়ে থাকা আমানত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানোর একটি নির্দেশনা দেওয়া আছে। ব্যাংকগুলো অদাবিকৃত আমানতের অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দিচ্ছে। একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা করছে। তিনি জানান, তবে অনেক ব্যাংক এখনও অর্থ জমা করেনি। ওই সব ব্যাংকে পরিদর্শনের সময় বিষয়টি দেখা হচ্ছে। এ ধরনের হিসাব পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোনো ব্যাংকের কাছে ১০ বছর ধরে আমানত ও মূল্যবান সামগ্রীর দাবিদার না থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও তা মানছে না অনেক ব্যাংক। আবার কিছু ব্যাংক জমা দিলেও সঠিক নিয়মে তথ্য ও সুদের হিসাব করছে না। বছরের পর বছর ধরে ব্যাংকগুলো নিজস্ব সম্পদ হিসেবে এসব অর্থ ব্যবহার করছে। বিভিন্ন পরিদর্শনে বিষয়টি উঠে আসে। এরপরই নড়েচড়ে বসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

দাবিবিহীন আমানত ও মূল্যবান সামগ্রী জমা দেওয়ার বিস্তারিত জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে নির্দেশনা রয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে অর্থ জমা দেওয়ার পরও দুই বছরের মধ্যেও দাবিদার এলে টাকা ফেরত দেওয়া হবে। আর এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে হস্তান্তরিত অদাবিকৃত আমানত ও মূল্যবান সামগ্রীর তালিকা সংশ্নিষ্ট ব্যাংক তাদের ওয়েবসাইটে এবং সরকারি গেজেট ও অন্যূন দুটি পত্রিকায় প্রতি তিন মাসে একবার করে এক বছর ধরে প্রকাশ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটেও এক বছর ধরে এ-সংক্রান্ত তথ্য প্রদর্শন করা হবে। এর পরও দুই বছরের মধ্যে কোনো দাবি উত্থাপিত না হলে বাকি অর্থ বা সামগ্রীর ওপর আর কোনো দাবি থাকবে না। পরবর্তী সময়ে তা সরকারের সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে এবং সরকারের কাছে ন্যস্ত করা হবে।

ব্যাংকগুলো অদাবিকৃত আমানত ও মূল্যবান সামগ্রীর তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে জমার পরও গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে স্বাক্ষরের দলিল ও অন্যান্য দলিল সংরক্ষণ করতে হবে। শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার পর আর তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে না। একই সঙ্গে সংশ্নিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার আবেদনপত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকে হস্তান্তরের বিষয়টি চিহ্নিত করতে হবে। মৃত ব্যক্তির জমানো অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য মৃত্যু সনদ জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে নমিনি মনোনয়ন করা না থাকলে উত্তরাধিকার সনদ অনুযায়ী উপযুক্ত উত্তরাধিকারী সংশ্নিষ্ট ব্যাংকে আবেদন করবেন।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news