নাগরিকত্ব ত্যাগ করা ব্যক্তির পাচার অর্থে বসবে কর

প্রথম নিউজ, অনলাইন:জন্মসূত্রে বাংলাদেশি ছিলেন, কিন্তু পরবর্তী সময়ে নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন- এমন ব্যক্তিদের বাংলাদেশে অর্জিত আয় নজরদারির আওতায় আনার পরিকল্পনা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
প্রস্তাবিত বাজেটে এ ধরনের ব্যক্তির কাছ থেকে ফাঁকি দেওয়া কর আদায়ে আয়কর আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশে তাদের সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেলে কর ফাঁকির দায়ে তা জব্দের সুযোগ সৃষ্টি হলো।
বাজেট বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জন্মসূত্রে বাংলাদেশি ছিলেন অথচ পরবর্তীতে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন এমন ব্যক্তির বাংলাদেশে অর্জিত আয়ের ওপর যথাযথভাবে কর পরিশোধ না করে নানা উপায়ে বিদেশে পাচারকৃত অর্থ সম্পদের ওপর কর ও জরিমানা আরোপের বিধান করা হয়েছে।
স্বাধীনতার পর বিগত ৫০ বছরে কখনো আয়কর নথিতে বিদেশি সম্পদ দেখানোর সুযোগ রাখেনি এনবিআর। ২০২২ সালে বাজেট ঘোষণার সময় এই সুযোগ রাখা হয়। পাশাপাশি ওই বছর ঘোষিত বাজেটে এক বছরের জন্য বিদেশে পাচার করা অর্থ বিনাপ্রশ্নে নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়; কিন্তু ওই সুযোগও কেউ নেননি।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আওয়ামী ঘনিষ্ঠ অনেক ব্যবসায়ী বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আত্মসমর্পণ করে বিদেশে পাড়ি জমান। এদের সবার বিরুদ্ধেই বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ আছে। যেহেতু তারা আইনত বিদেশি নাগরিক, তাই বিদ্যমান আয়কর আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ ছিল না। এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলসহ (সিআইসি) সরকারি সংস্থাগুলো এ ধরনের ব্যবসায়ীদের অর্থ পাচার ও কর ফাঁকি প্রমাণিত হওয়ায় তাদের কাছ থেকে কর আদায়ে প্রস্তাবিত বাজেটে আয়কর আইন সংশোধন করা হয়েছে। এর ফলে তাদের সম্পত্তি ক্রোক বা জব্দ করা সম্ভব হবে।
গত ২৭ মে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশ থেকে ১৮-২০ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৮০০ কোটি থেকে ২ হাজার কোটি ডলার পাচার হয়েছে (বাংলাদেশি টাকায় ২ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ কোটি থেকে ২ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা)। বিদেশে শুধু একজনই ৩৫০টি বাড়ি কিনেছেন। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এসব অর্থ পাচার করা হয়েছে। এসব ঘটনা উদ্ঘাটন করা গেছে। দিন দিন এই অর্থের অঙ্ক আরও বাড়ছে।