'বাঁধের যে অবস্থা, ভাইসা যাওয়া ছাড়া নিস্তার নাই'

কসই ও কার্যকরী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন বরগুনার বাসিন্দারা।

'বাঁধের যে অবস্থা, ভাইসা যাওয়া ছাড়া নিস্তার নাই'

প্রথম নিউজ, বরগুনা: প্রতি বছরই কোনো না কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষত-বিক্ষত হয় সাগর তীরবর্তী জেলা বরগুনা। আর এসব আঘাতে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বিস্তৃর্ণ জনপদ। ফসলের ক্ষেত, মাছের ঘের, গবাদি পশু ঘরবাড়িসহ ভেসে যায় মানুষও। তাই টেকসই ও কার্যকরী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন বরগুনার বাসিন্দারা।

এদিকে টেকসই ও কার্যকরী বাঁধ নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যত কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কারেই সীমাবদ্ধ থাকছে কার্যক্রম। প্রতি বছর সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হতে হচ্ছে উপকূলবাসীকে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ষাটের দশক থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বরগুনায় ২৭টি পোল্ডারে ৮০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এসব বাঁধের মধ্যে প্রায় ৩০ কিলোমিটার বাঁধ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ ছাড়াও জোয়ার কিংবা জলোচ্ছ্বাসের পানির উচ্চতার তুলনায় নিচু বাঁধ রয়েছে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার।

পায়রা নদীর তীরবর্তী তালতলী উপজেলার নলবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, যেই বেড়িবাঁধ পূর্ণিমা কিংবা অমাবস্যার জোয়ারের পানির চাপই সামলাতে পারে না, সেই বেড়িবাঁধ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলা করবে কী করে ভেবে পাচ্ছি না! পাথরঘাটার জ্বীনতলা এলাকার বাসিন্দা হোসনে আরা বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় হইলে বাঁধের যেই অবস্থা, ভাইসা যাওয়া ছাড়া নিস্তার নাই। ঘরের মানুষজন, গবাদি পশু, হাঁস- মুরগি লইয়া কই আশ্রয় নেব খুঁজতেছি।

পায়রা নদীর তীরবর্তী বরগুনা সদরের বালিয়াতলী এলাকার জাফর হোসেন বলেন, ‘বেড়িবাঁধ আমাদের রক্ষাকবচ হলেও সেই রক্ষাকবচের কারণেই এখন আমরা অরক্ষিত। তাই সহায়-সম্বল রক্ষার জন্য শেষ মুহূর্তে চেষ্টা করছি। পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা পারভীন বলেন, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি আমাদের বহুদিনের। ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর থেকেই এ দাবিতে সোচ্চার ছিলাম আমরা। কিন্তু বেড়িবাঁধ নির্মাণের নামে আমাদের সঙ্গে ছলনা করা হচ্ছে। শুধু আশ্বাসে আশ্বাসে পার হয়েছে এক যুগ।

বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নূরুল ইসলাম বলেন, শুকনো মৌসুমে আমাদের বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য কয়েকটি প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো অনুমোদন পেলে বাঁধ নিয়ে আর কোনো সমস্যা থাকবে না। আপাতত কোথাও বাঁধ ভেঙে গেলে তা মেরামতের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom