Ad0111

প্রতিমাসে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ের ক্ষমতা চায় বিপিসি

আন্তর্জাতিক বাজারে এখন ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে জ্বালানি তেল বিক্রি হচ্ছে

প্রতিমাসে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ের ক্ষমতা চায় বিপিসি
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: আন্তর্জাতিক বাজারে এখন ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে জ্বালানি তেল বিক্রি হচ্ছে। এই বাড়তি দামে তেল কিনে কম দামে বিক্রি করতে গিয়ে লোকসানে পড়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এদিকে ভারতের বাজারের চেয়ে বাংলাদেশের বাজারে তেলের দাম কম হওয়ার কারণে পাচারের শঙ্কার কথাও জানিয়েছে তারা।

লোকসান এবং পাচার রোধে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিমাসে দাম সমন্বয় করতে চায় বিপিসি। যদিও বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) আইন অনুযায়ী সব পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম নির্ধারণ করার কথা বিইআরসি’র। তারপরও এতদিনে এই কাজটি করে এসেছে সরাসরি জ্বালানি বিভাগ। এখন বিপিসি অন্য জ্বালানি তেলের মতো ডিজেল, অকটেন , কেরোসিন ও পেট্রোলের দাম নির্ধারণের ক্ষমতাও চাইছে।

সর্বশেষ ২০১৩ সালে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। এরপর আবার ২০১৬ সালে এসে দাম কমানোও হয়। ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মূল্য সমন্বয়ের সময়  প্রতি লিটার অকটেন ৯৯ টাকা, পেট্রোল ৯৬ টাকা, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর ২০১৬ সালে তা কিছুটা কমিয়ে লিটারপ্রতি ডিজেলের দাম ৬৫ টাকা, কেরোসিনের দাম ৬৫ টাকা, অকটেনের দাম ৮৯ টাকা ও পেট্রোলের দাম ৮৬ টাকা করা হয়।

বর্তমান পরিস্থিতিতে বিপিসি বলছে,  বেশি দামে কিনে ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলে ক্ষতি হচ্ছে প্রতিদিন ২০ কোটি টাকারও বেশি। প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজার ৮০০ টন ডিজেল বিক্রি করে তেল বিপণন প্রতিষ্ঠানগুলো। একইসঙ্গে দুই হাজার টন ফার্নেস অয়েল বিক্রি হয় বাংলাদেশে।

গত ২০ অক্টোবরের হিসাব অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেলের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি ৯৪ দশমিক ৫৯ মার্কিন ডলার। আর বাংলাদেশের লিটার প্রতি এই ডিজেল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। বিপিসির হিসেবে তাদের লোকসান হচ্ছে লিটার প্রতি ১৩ দশমিক ৭৭ টাকা। একইভাবে ফার্নেস অয়েলের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি ৪৮৭ দশমিক ২১ ডলার, দেশে বিক্রি হচ্ছে ৫৯ টাকা, এতে লোকসান হচ্ছে ৫ দশমিক ৭৩ টাকা।

এত তো গেলো লোকসানের হিসাব। অন্যদিকে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম কম হওয়ার কারণে পাচারেরও শঙ্কাও প্রকাশ করছে বিপিসি। তারা জানায়, গত ২৪ অক্টোবর ভারতে ডিজেলের দাম প্রতি লিটার ৯৯ দশমিক ৪৩ পয়সা। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১২৩ টাকা ২৪ পয়সা। সে হিসেবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ডিজেলের দামের ব্যবধান লিটার প্রতি প্রায় ৫৮ টাকা ২৪ পয়সা। ফলে বাংলাদেশের সরকারের ভর্তুকিতে দেওয়া কম দামের ডিজেল ভারতে পাচারের শঙ্কা দেখছে বিপিসি। 

বিপিসির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এখন ডিজেল, অকটেন, পেট্রোল ও কেরোসিনের দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি বিভাগ। তবে আগে থেকেই জেট ফুয়েল , ফার্নেস অয়েল ও মেরিন ফুয়েলের দাম নির্ধারণ করে বিপিসি। এই পণ্যগুলোর মতোই অন্য জ্বালানি তেল গুলোর দাম নির্ধারণের ক্ষমতা বিপিসিকে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে জ্বালানি বিভাগের কাছে চিঠি দেয়া হবে।  তিনি বলেন, একদিকে লোকসান এবং অন্যদিকে পাচারের কথা চিন্তা করেই আমাদের প্রতিমাসে দাম সমন্বয় করা প্রয়োজন।

আন্তর্জাতিক বাজারে চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে ব্যারেল প্রতি অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ছিল ৪৯ ডলার। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তা বেড়ে হয়ে যায় ৬১ ডলার। চার মাস পর জুনের মাঝামাঝি আরও বেড়ে ৭১ ডলারে গিয়ে দাঁড়ায়। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি হয় ৭৫ ডলার। এরপর ধীরে ধীরে বেড়ে এখন ৮৩ ডলারে পৌঁছেছে।

বাংলাদেশ বছরে মাত্র ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করে। বাকি চাহিদা মেটাতে পরিশোধিত তেল আমদানি করা হয়। অপরিশোধিত তেলের দামের ওপর ভিত্তি করেই সব ধরনের জ্বালানির দাম নির্ধারণ হয়। সঙ্গত কারণে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় পরিশোধিত তেলের দামও আনুপাতিক হারে বাড়ছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news