পাইলটের সিটের নিচে গোখরা সাপ, উড়োজাহাজের জরুরি অবতরণ

বিবিসিকে এরাসমুস বলেন, সত্যি কথা কী ঘটছে তা আমার মস্তিষ্ক বুঝতে পারছিল না। হকচকিয়ে যাওয়ার একটি মুহূর্ত ছিল।

পাইলটের সিটের নিচে গোখরা সাপ, উড়োজাহাজের জরুরি অবতরণ
পাইলটের সিটের নিচে গোখরা সাপ, উড়োজাহাজের জরুরি অবতরণ

প্রথম নিউজ অনলাইন ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকার পাইলট রুডল্ফ এরাসমুসের জন্য এটি আরেকটি স্বাভাবিক ফ্লাইট ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টে যায় যখন ১১ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়োজাহাজে এক অতিরিক্ত যাত্রী তার চোখে পড়ার পর। অবশ্য ওই যাত্রী কোনও মানুষ না, একটি বিষধর গোখরা সাপ তার সিটের নিচে মাথা লুকিয়ে আছে।  বিবিসিকে এরাসমুস বলেন, সত্যি কথা কী ঘটছে তা আমার মস্তিষ্ক বুঝতে পারছিল না। হকচকিয়ে যাওয়ার একটি মুহূর্ত ছিল। তিনি জানান, প্রথমে মনে হয়েছিল তার পিঠে হয়ত ঠান্ডা কোনও পানির বোতল রয়েছে। বলেন, আমি শীতল অনুভূতি পাচ্ছিলাম শার্টের ওপর দিয়ে। প্রথমে ভাবছিলাম হয়ত বোতলের মুখ ঠিকমতো লাগানো হয়নি এবং শার্ট গড়িয়ে হয়ত পানি পড়ছে।

তিনি আরও বলেন, আমি যখন বাঁ দিকে ফিরে নিচের দিকে তাকাই তখন দেখতে পাই গোখরা সাপটি আমার সিটের নিচে মাথা লুকিয়ে আছে। সাপটি দেখতে পাওয়ার পর সোমবার ব্লুমফন্টেইন থেকে প্রিটোরিয়া ফ্লাইটের গন্তব্য পাল্টে উড়োজাহাজের জরুরি অবতরণ করেন পাইলট। এতে আরও চার যাত্রী ছিলেন। গোখরা সাপের একটি দংশনও প্রাণঘাতী। দংশনের মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে মৃত্যু হতে পারে মানুষের। তাই আতঙ্ক সৃষ্টি না করে এরাসমুস সতর্কতা অবলম্বন করেন অপর যাত্রীদের বিষয়টি বলার আগে। তিনি ভয় পেয়েছিলেন সাপটি হয়ত পেছনে চলে গিয়ে আতঙ্ক ছড়াতে পারে। শেষ পর্যন্ত তিনি উড়োজাহাজের অপর যাত্রীদের জানান যে, তাদের সঙ্গে এক অনাকাঙ্ক্ষিত যাত্রী রয়েছে।

যাত্রীদের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে পাইলট বলেছেন, বিষয়টি বলার পর পিনপতন নীরবতা বিরাজ করছিল। আমার মনে হয় সবাই এক বা দুই মিনিটের স্তব্ধ হয়ে যায়। এরাসমুস বলেছেন, পাইলটদের অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তবে আমি নিশ্চিত এমন পরিস্থিতির কথা হয়ত ভাবা হয়নি। আতঙ্কিত হতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হত। উড়োজাহাজটি ওয়েলকম শহরে জরুরি অবতরণ করে।

অবশ্য ককপিটে সাপটির উপস্থিতি একেবারে অবাক হওয়ার মতো ছিল না। ওরচেস্টার ফ্লাইং ক্লাবের দুই কর্মী বলেছেন, উড়োজাহাজে একটি সাপের উপস্থিতি তারা টের পেয়েছিলেন। তারা এটিকে ধরতে চেষ্টা করলেও সফল হননি। এই বিমানবন্দর থেকেই প্রথমে উড্ডয়ন করে উড়োজাহাজটি। এরাসমুসও বিষয়টি জানতেন। তিনি বলেছেন, উড়োজাহাজে যাত্রীরা উঠার আগে তিনি সাপটিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু খুঁজে পাননি। মনে করেছিলেন রাতে বা ভোরে সাপটি হয়ত নেমে গেছে। ফলে উড়োজাহাজ যাত্রীদের জন্য নিরাপদ।

একজন বীর হিসেবে এরাসমুস প্রশংসিত হচ্ছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার সিভিল অ্যাভিয়েশন কমিশনার পপি খসাও তার প্রশংসা করেছেন। তবে এই পাইলট মনে করেন তিনি বিশেষ কিছু করেননি। কিছুটা অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে। যাত্রীরা শান্ত ছিলেন বলে নিরাপদে অবতরণ সম্ভব হয়েছে। সূত্র: বিবিসি