নীলফামারীতে বিয়ে ভেঙ্গে দেওয়ার আক্রোশে বন্ধুকে খুন
প্রথম নিউজ, নীলফামারী : নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বোনের নামে মিথ্যা বদনাম রটানো ও বন্ধুর বিয়ে
ভেঙ্গে দেওয়ার আক্রোশে গাজা সেবন করার কথা বলে ডেকে এনে মোর্শেদ ইসলাম (৩৩) নামে এক যুবকের হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। মৃত মোর্শেদুল কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর দুরাকুটি বাসোপাড়ার একরামুল হকের ছেলে। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ। সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে
অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ওই তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার গোলাম সবুর
পিপিএম। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন,‘ কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর দুরাকুটি মাষ্টারপাড়াএলাকার মামুনুর রশিদের ছেলে বাদশা আলমগীর (৩১), বাসোপাড়া এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে ইব্রাহিম ইসলাম(১৯), নুরুজ্জামান ওরফে পেলকুমেম্বারের ছেলে সেলিম মিয়া(২৭) ও ময়নুকুড়ি এলাকার মামুদ আলীর ছেলে আনারুল ইসলাম (৩০)।’ সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান,‘হত্যার শিকার মোর্শেদুল ও আসামীরা গাজাসেবী ছিল। তারা একসাথে বন্ধুর মত গাজা সেবন করতো। তাদের মধ্যে টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধ ছিল। হত্যার শিকার মোর্শেদুল আসামী ইব্রাহিমের বোনের পালিয়ে বিয়ে করেছে বলে মিথ্যা তথ্য রটিয়ে বেড়ায় এবং আসামী সেলিমের ঠিক হয়ে থাকা বিয়ে ভেঙ্গে দেয়। এছাড়া অন্যান্য আসামীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়ায় মোর্শেদুলকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে আসামীরা। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৪
আগস্ট রাতে আসামী ইব্রাহিম গাজা কিনে এনেছে এবং তা সেবন করার
জন্য ফোন দিয়ে মোর্শেদুলকে ডেকে নিয়ে আসে। পরিকল্পনা মোতাবেক
মোর্শেদুল গাজা সেবনের স্থানে নিয়ে এসে মোর্শেদুল উপর ধারালো অস্ত্র
দিয়ে আক্রমন করে তাকে হত্যা করে আসামীরা এবং পড়নের কাপড়
পরিধানকৃত কাপড় দিয়ে বস্তার মত করে বেঁধে ওই এলাকার কারবলার ডাঙ্গা
সংলগ্ন ধাইজান নদী খননের বালুর স্তুপে পুতে রাখে।’
পুলিশ সুপার গোলাম সবুর বলেন,‘মৃত্যুর তিনদিন পর অজ্ঞাত ব্যাক্তির লাশ
উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর লাশ শনাক্ত না হওয়ায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। এরপর
বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষন করে নিহত ব্যক্তি মোর্শেদুল বলে ধারণা করে
পরিবার। এরপর থেকে এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ধরতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
এরপর গত ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার পল্লবী থানা এলাকা থেকে বাদশা আলমগীর ও ২৪
সেপ্টেম্বর ইব্রাহিমকে, ২৭ সেপ্টেম্বর নিজ বাড়ী সেলিম ও আনারুলকে
গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ইব্রাহিম, সেলিম ও আনারুল
আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক ফৌজদারী কার্যবিধি ১৪৪ ধারায় হত্যাকান্ডের
সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আমিরুল ইসলাম,
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত
পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) মোহাম্মদ সারোআর আলম, সৈয়দপুর
থানার অফিসার ইনচার্জ রাজীব কুমার রায়, নীলফামারী সদর থানার অফিসার
ইনচার্জ তানভীরুল ইসলাম, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার
সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।