নারী শরীর বদলে পুরুষ হয়েছিলেন, এখন আবার নারীই হতে চান ইনি
নিজের শরীর এবং নারীত্বকে তিনি অপছন্দ করতে শুরু করেন
প্রথম নিউজ, ডেস্ক: চকোলেট উপহার পেলেন। কিন্তু সে উপহার পছন্দ হল না। ঠিক করলেন বদলাবেন। দোকানে গিয়ে বদলে আনলেনও। কিছু দিন পর আবার মত বদল। মনে হল পুরনো চকোলেটটিই ছিল ভাল। ফলে আবার ছুট ছুট ছুট... । দ্বিধাগ্রস্ত এক রূপান্তরকামীও কিছুটা এমনই সমস্যায় পড়ছেন। তফাৎ এ টুকুই যে, নিজের শরীরকেই বারবার বদলাতে চাইছেন তিনি। রূপান্তরের কামনা মিটেও মিটছে না তাঁর মিশিগানের ডেট্রয়েটের বাসিন্দা ইশা ইসমাইল জন্মেছিলেন নারী হিসাবে।
যদিও পরে নিজের শরীর এবং নারীত্বকে তিনি অপছন্দ করতে শুরু করেন। এখন ইশার বয়স ২৬। তবে তিনি নিজেকে রূপান্তরকামী বলে ঘোষণা করেন ১৯ বছর বয়সেই। তখন থেকেই শুরু হয় তাঁর পুরুষ হওয়ার প্রক্রিয়া। প্রথমেই অস্ত্রোপচার করে নিজের শরীর থেকে স্তনদু’টি বাদ দেন ইশা। তিনি জানিয়েছেন, নিজেকে এক জন সম্পূর্ণ পুরুষ হিসেবে দেখতে তিনি এতটাই আগ্রহী ছিলেন যে এ ব্যাপারে একটুও দেরি করতে চাননি। পাশাপাশি, হহরমোনের চিকিৎসাও শুরু করা হয়।
পুরুষদেহে যে হরমোনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি, সেই টেস্টোস্টেরন হরমোন নিয়মিত ভাবে নিতে শুরু করেন তিনি। ১১ মাসের মধ্যেই তাঁর শরীরে পুরুষ হওয়ার লক্ষণ প্রকট হতে শুরু করে। ইশা জানিয়েছেন, তাঁর শারীরিক পরিবর্তনের এই মুহূর্তগুলি তখন তিলে তিলে উপভোগ করছেন তিনি। প্রতি মুহূর্তের রেকর্ডও রাখছেন ছবিতে, ভিডিয়োয়। টানা ছ’বছর হরমোন চিকিৎসার পর পুরদস্তুর পুরুষ হয়ে ওঠেন তিনি। নিজের ছবি দিয়ে ইশা লিখেছেন, জন্মগত পুরুষের সঙ্গে আমার তফাৎ করা যেত না তখন। অথচ এই ইশাই ২০১৫ সালের আগে তাঁর বয়সি আর পাঁচটি মেয়ের মতোই মেকআপ প্রেমী, সাজগোজ প্রেমী তরুণী ছিলেন। এমনকি এক জন প্রেমিকও ছিল তাঁর।
পুরনো জীবনের বর্ণনা দিতে গিয়ে ইশা লিখেছিলেন, ‘ছোটবেলায় আবার একটু ছেলে ছেলে ভাব থাকলেও পরের দিকে আমি কিন্তু এক জন সাধারণ তরুণীই ছিলাম।’ পরে পুরুষ হয়েও সুখী হতে পারছিলেন না ইশা। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর আচমকাই মনে হয়, তিনি পুরুষ জীবন আর চান না। এই না চাওয়া এতটাই তীব্র হতে শুরু করে যে, তা থেকে জন্ম নেয় হতাশা। এই হতাশাবোধ থেকেই ফের শরীর বদলানোর সিদ্ধান্ত। টেস্টোস্টেরন হরমোন নেওয়া বন্ধ করে দেন ইশা।
সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন আবার ফিরবেন পুরনো শরীরে। জন্মসূত্রে পাওয়া নারীদেহই প্রয়োজন তাঁর। আপাতত সেই প্রক্রিয়াই শুরু করেছেন ইশা। ছ’বছর ধরে পুরুষ হয়ে এ বার ফের নারীত্বে ফিরছেন তিনি। হরমোনের চিকিৎসা বন্ধ করার কয়েক মাসের মধ্যেই নারীত্ব অনুভবও করছেন বলে জানিয়েছেন ওই রূপান্তরকামী।
এখন ইশা চান, তাঁর মতো যাঁরা নিজেদের পরিচয় নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত তাঁদের তিনি সাহায্য করবেন। দিশা দেখাবেন ঠিক পথটি চিনে নিতে।তবে একজন দ্বিধাগ্রস্ত রূপান্তরকামী হিসেবে ইশার পরামর্শ সত্যিই তাঁরা নেবেন কি না বা নিলেও ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে সেটাই প্রশ্ন!
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: