দেশে এখন আওয়ামী স্টাইলের গণতন্ত্র চলছে: নজরুল ইসলাম

 দেশে এখন আওয়ামী স্টাইলের গণতন্ত্র চলছে: নজরুল ইসলাম

প্রথম নিউজ, ঢাকা : ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সংসদের ৩৫০টি আসনের মধ্যে সরকারের দয়ায় বিরোধীদল মাত্র ১৩টি আসন পেয়েছে। আবার স্বতন্ত্র ও অন্য দলগুলো থেকে যারা এসেছেন তারাও সরকারপ্রধানকে স্যালুট দিয়ে এসেছেন। এটাই হলো আওয়ামী স্টাইলের গণতন্ত্র, যা এখন দেশে চলছে। কিন্তু এটা সত্যিকারের গণতন্ত্র নয়।

বুধবার (৬ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। ১৯৭৫ সালে বাকশাল কায়েম করে সেই গণতন্ত্র কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। পরে ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন। ১৯৮২ সালে স্বৈরাচার এরাশাদ আবারও জোর করে ক্ষমতা দখল করে গণতন্ত্র হত্যা করেছেন। এর বিরুদ্ধে লড়াই করে এরশাদের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলেন খালেদা জিয়া। এবারও বিএনপি সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলনে নেমেছে।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে বিএনপির মতো এত ত্যাগ অন্য কোনো দল স্বীকার করেনি। আজকে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক মাসে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে সাজা দেওয়া হয়েছে। এক এগারোর সময়েও অসংখ্য নেতাকর্মীকে সাজা দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীকালে সেগুলো টেকেনি। আগামী দিনেও লড়াইয়ের মুখে এসব মামলা ও সাজা টিকবে না।

বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য ট্যাক্স নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অনুসন্ধান না করে তা আমদানি করছে সরকার। আজকে সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য রাতারাতি বাড়িয়ে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। তাই সরকার পরিবর্তন ছাড়া, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া লুটপাট ও দুর্নীতি বন্ধ হবে না। জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজকে তাঁতী সমাজ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। তাঁতী শ্রমিকরা যন্ত্রের কাছে পরাজিত হয়ে বেকার হয়েছে। আমাদের তাঁতের কাপড়ে ঐতিহ্য সেটাও লুট হয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল শাড়িও আজকে বাংলাদেশের সম্পদ নয়, পাশের প্রতিবেশী বন্ধু দেশ তাদের বলে দাবি করছে। অথচ সেই সময়ে সরকার প্রতিবাদ না করে চুপ থেকেছে। তাই তাঁতশিল্পের সঙ্গে প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আগামী দিনের আন্দোলনে রাজপথে নামার জন্য সবাইকে প্রস্তুত হতে হবে।

সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, এ সরকারকে আমরা মানি না, তাদের আচার-আচরণ মানি না। সময় বেশি দূরে নয়, হিসাব-নিকাশের দিন সামনে। আগামী দিনে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হবে।

জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম মাওলা খান বাবলু এবং তাঁতীদলের সদস্য সচিব হাজী মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, তাঁতী বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন ইসলাম খান, সহ-অর্থনৈতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন ও মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব মো. আব্দুর রহিম প্রমুখ।