ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পাওয়ার ৬ বছর আগেই মেয়াদ শেষ!

সবুজের ডাইভিং লাইসেন্স কার্ডে দেখা গেছে, ২০২১ সালের মাঝামাঝি লাইসেন্সের জন্য তিনি আবেদন করেছিলেন রাজশাহী বিআরটিএর আঞ্চলিক অফিসে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পাওয়ার ৬ বছর আগেই মেয়াদ শেষ!
ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পাওয়ার ৬ বছর আগেই মেয়াদ শেষ!

প্রথম নিউজ, রাজশাহী : বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) রাজশাহী আঞ্চলিক অফিসে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে দিয়েছিলেন নাহিদ হোসাইন সবুজ (৩০)। অনেকবার ঘুরে গত মঙ্গলবার ২৮ ফেব্রুয়ারি হাতে পান ডিজিটাল লাইসেন্স কার্ড। তবে লাইসেন্স হাতে পেয়ে রীতিমতো চমকে ওঠেন তিনি। সবুজ দেখতে পান নতুন লাইসেন্সের মেয়াদ ৬ বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে।  ট্রাকচালক সবুজের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌর এলাকার মাস্টারপাড়া মহল্লায়। সবুজ শাহ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি মাছ চালানি প্রতিষ্ঠানের কাভার্ডভ্যান চালক হিসেবে কাজ করেন। 

সবুজের ডাইভিং লাইসেন্স কার্ডে দেখা গেছে, ২০২১ সালের মাঝামাঝি লাইসেন্সের জন্য তিনি আবেদন করেছিলেন রাজশাহী বিআরটিএর আঞ্চলিক অফিসে। তবে হাতে পাওয়া নতুন কার্ডে লাইসেন্স ইস্যুর দিন তারিখ দেওয়া আছে ২০১১ সালের ১৩ অক্টোবর। মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখের ঘরে আছে ২০১৬ সালের ১২ অক্টোবর।  সবুজের আবেদনের ১০ বছর আগেই লাইসেন্সটি তৈরি হয়েছে। আর মেয়াদ শেষে হয়ে গেছে ছয় বছর আগে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছেন, বিষয়টি কোনোভাবে ভুল হয়েছে। সংশোধনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সবুজ আরও জানান, এই লাইসেন্স পেতে তাকে পাঁচ দফা ডেলিভারি কাগজে মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে হয়েছে রাজশাহী বিআরটিএ অফিসে এসে। অনেকবার ঘুরেও লাইসেন্স হাতে পাননি। ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড না থাকায় রাজশাহী-ঢাকা চলাচলে বিভিন্ন সড়ক মহাসড়কে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হয়েছে অনেকবার। গুনতে হয়েছে আর্থিক জরিমানাও। 

এদিকে সবুজের আবেদনের নথিপত্রে দেখা গেছে, লাইসেন্স কার্ড ডেলিভারির সময় দেওয়া রয়েছে ৩০ ডিসেম্বর ২০২১। সবুজের ভাষায় আবেদনের পর তারা আমার ছবি মোবাইলে তুলে নিয়ে কয়েকবার ই-মেইলে তা ঢাকায় পাঠিয়েছেন। তারা বলেছিলেন কিছুদিন পরে এসে খোঁজ নিতে। এভাবে ১৫ মাস সময় গেছে। কয়েকবার ডেলিভারির সময় বাড়িয়েছেন। 

সবুজ অভিযোগে আরও বলেন, ব্যাপক হয়রানি হতে হয়েছে ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ডের জন্য। তারা দুই-তিন মাস পরপর ডেলিভারি তারিখ বাড়িয়েছেন। অনেকবার কার্ডের জন্য রাজশাহী বিআরটিএ আঞ্চলিক অফিসে গিয়ে খোঁজ নিয়েছেন তিনি। অনেকবার ঘুরে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি লাইসেন্স কার্ড হাতে পান। তাও মেয়াদোত্তীর্ন। ভুক্তভোগী আরও বলেন, লাইসেন্স কার্ড পেতে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার। বিভিন্ন ধরণের টেস্ট নেওয়া হয়েছে। টাকা দিয়ে পার হতে হয়েছে। ডোপ টেস্ট করতেই লেগেছে ১ হাজার টাকা। অথচ এটা বিনামূল্যে পাওয়ার কথা। 

এ প্রসঙ্গে বিআরটিএ রাজশাহী সার্কেলের সহকারী পরিচালক আব্দুল খালেক বলেন, এটা বিআরটিএর ভুল নয়। যে প্রতিষ্ঠান কার্ড বানিয়েছে তাদের ভুল। আমরা স্বীকার করছি ভুল হয়েছে। তাকে বলেছি, দুই দিন পর অফিসে আসতে। তার পরে আবেদন লিখে পাঠিয়ে দেব। কার্ডটি ঠিক হয়ে যাবে।

 Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: