‘টাকার জন্য বন্ধুদের নিয়ে বাবাকে গলাকেটে হত্যা’

শনিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী।

‘টাকার জন্য বন্ধুদের নিয়ে বাবাকে গলাকেটে হত্যা’

প্রথম নিউজ, কিশোরগঞ্জ: টাকার জন্য বন্ধুদের নিয়ে বাবাকে গলাকেটে হত্যা করেছে ছেলে। হত্যার সময় ধান ক্ষেতে বাবার মাথা চেপে ধরেন ছেলে সোহেল মিয়া। গত ১৯ অক্টোবর রাতে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের সুলতানপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে বাবাকে গলাকেটে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন নিহতের ছেলে গ্রেপ্তার সোহেল মিয়া। শনিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী।

নিহত নিবু মিয়া (৬৫) জেলার বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়ন সুলতানপুর এলাকার মৃত সুন্দর আলী মুন্সির ছেলে। আটক আসামিরা হলেন- নিহত নিবু মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া (২৪), তার বন্ধু বাবুল মিয়া (৩২), নজরুল ইসলাম (৪৫) ও সুমন মিয়া (২৬)।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, গত ২০ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খবর পেয়ে পুলিশ জেলার বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়ন সুলতানপুর এলাকার তেলিবাড়ী বন্দের ধান ক্ষেত থেকে নিহত নিবু মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে। পরে এ ঘটনায় নিহতের অপর ছেলে আব্দুর রহমান হৃদয় (২৮) বাদী হয়ে বাজিতপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

তিনি বলেন, মামলা দায়েরের পর পুলিশের একটি দল প্রযুক্তিগত ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বাজিতপুর উপজেলার দক্ষিণ পিরিজপুর বাজার এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত আসামি মো. বাবুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। আসামি নিজেই স্বীকারোক্তি দেয় ভিকটিমের সঙ্গে থাকা নগদ ৭০ হাজার টাকা খুনিরা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে যায়। আসামি বাবুল মিয়ার তথ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ভিকটিমের ছোট ছেলে সোহেল মিয়াসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, এক বছর আগে ভিকটিম নিবু মিয়া জমি বিক্রি করেন ২১ লাখ টাকা। সে টাকা থেকে ছয় লাখ টাকা দিয়ে তার ছোট ছেলে সোহেল মিয়াকে বিদেশে পাঠায়। কিন্তু সোহেল বিদেশে থাকতে পারেনি। দেশে চলে এলে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন তিনি। সংসার চালাতে এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে পুরাতন অটোরিকশা কিনেন সোহেল। কিন্তু সোহেল তার বাবার কাছে জমি বিক্রির আরও যে টাকা ছিল তা তাকে দিতে বলে। এ টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। ভিকটিম নিবু মিয়া টাকাগুলো তার সঙ্গে রাখতেন।

এসপি মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, ঘটনার দিন টাকা নেওয়ার জন্য সোহেল বন্ধুদের নিয়ে নিবু মিয়াকে গলাকেটে হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আটক বাবুল মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন এবং টাকার জন্য ভিকটিম নিবু মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া তাদের নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলেও জবানবন্দিতে জানান বাবুল।