ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় পুলিশ সদস্যকে গণপিটুনি

প্রথম নিউজ, নাটোর: নাটোরের গুরুদাসপুরে দুই স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পৌরশহরের চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পেছনের গলির ভেতর এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ওই পুলিশ সদস্যকে আটকে উত্তম-মধ্যম দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোনোয়ারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের নাম কামরুল হাসান। ঘটনার সময় সিভিল পোশাকে ছিলেন। অবিবাহিত এই পুলিশ সদস্য ৮-৯ মাস আগে থানায় যোগদান করেছেন। বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া ছাত্রীর অভিভাবকরা চাইলে মামলাও করতে পারেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উত্ত্যক্তের শিকার দুই ছাত্রী তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির। স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য স্কুলে যাচ্ছিল তারা। স্কুলের পেছনের গলির ভেতর যাওয়া মাত্রই দুই ছাত্রীর মুখ চেপে ধরে ওই পুলিশ সদস্য। একপর্যায়ে হাত ফসকে দৌড়ে পালিয়ে বাঁচে দুই ছাত্রী। পরে বিষয়টি তারা শিক্ষকদের জানায়।

প্রধান শিক্ষক মাহমুদা পারভিন জানান, ছাত্রীর অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে ওই পুলিশ সদস্যকে পাওয়া যায়নি। পরে স্থানীয় একটি ধান চাতালের শ্রমিক জানান একটি ঘরের ভেতর লুকিয়ে রয়েছেন এক লোক। ঘরের ভেতর গিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা পুলিশ সদস্যকে শনাক্ত করলে সে দৌড়ে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে।

পরে বিদ্যালয়ের সামনের প্রধান সড়কে স্থানীয়রা ওই পুলিশ সদস্যকে আটক করে উত্তম-মধ্যম দেন। পুলিশ সদস্য পরিচয় দেওয়ার পর জনরোষ থেকে রক্ষা পান তিনি। পরিস্থিতি বিবেচনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে বিদ্যালয়ে আনা হয়। পরে থানায় খবর দেওয়া হলে ওসি মনোয়ারুজ্জামান গিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনেন।

অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের উদ্ধৃতি দিয়ে ওসি জানান, ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগটি সত্য নয়, পুলিশ সদস্য কামরুল হাসান বিভিন্ন সময়ে নাজিম উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে দায়িত্ব পালন করতেন, এ সুবাদে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। রোববার সিভিল পোশাকে ওই ছাত্রীর সঙ্গে সেখানে দেখা করতে গিয়েছিলেন। এ সময় দুই ছাত্রী তাদের দেখে ফেলায়, বিষয়টি শিক্ষকদের বলে দেওয়ার কথা বলায় দুই ছাত্রীর মুখ আটকে ধরেছিলেন। ঘটনা যাই ঘটুক অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি মনোয়ারুজ্জামান। ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীর বাবা বলেন, এ ঘটনায় মামলা করবেন তারা।