চিরনিদ্রায় শায়িত প্রেসিডেন্ট রাইসি
ইমাম রেজা সমাধিক্ষেত্রে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এই সমাধিতে সাধারণ কোনো ব্যক্তিকে দাফন করা হয় না।
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: লাখ লাখ মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ইরানের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। ইমাম রেজা সমাধিক্ষেত্রে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এই সমাধিতে সাধারণ কোনো ব্যক্তিকে দাফন করা হয় না। ইরানের প্রথম সর্বোচ্চ কোনো নেতা হিসেবে প্রেসিডেন্ট রাইসি শায়িত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করলেন। এর আগে তার মৃতদেহ মাশহাদে হাশেমিনেজাদ বিমানবন্দরে পৌঁছে। এসময় সেখানে উপস্থিত জনতার মাঝে নীরব বেদনা দেখা যায়। তারা তাদের প্রিয় নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। আগে থেকেই বিমানবন্দরে বিপুল পরিমাণ মানুষ এবং ইমাম রেজা সমাধির সেবকরা উপস্থিত ছিলেন। একই সঙ্গে ওই সমাধিক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টকে শায়িত করার সব প্রস্তুতি চলতে থাকে। তার মৃতদেহ সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথে পথে শোকাতুর ইরানবাসী তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এদিন ইরানের রাস্তায় রাস্তায় কালো পোশাকে মানুষের ঢল নেমেছিল। তাদের ভালোবাসাকে সঙ্গী করে প্রেসিডেন্টের মৃতদেহকে নিয়ে যাওয়া হয় ইমাম রেজা সমাধিস্থলে। মাশহাদে অবস্থানকারী বিদেশি মিশনগুলোর কূটনীতিকরা, প্রতিবেশী দেশগুলোর সরকারি কর্মকর্তারা এদিন তার দাফন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এর মধ্যে আছে ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, তুর্কি, তুর্কমেনিস্তান, সৌদি আরব, জাতিসংঘ প্রভৃতি। দাফন অনুষ্ঠানে অংশ নেন ইরাকের ন্যাশনাল উইসডম মুভমেন্টের নেতা সাঈদ আম্মার আল-হাকিম এবং
অন্য নেতারা। উল্লেখ্য, গত রোববার আজারবাইজান সীমান্তে একটি ড্যাম উদ্বোধন করে ইরানের তিবরিজে ফিরছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি ও সঙ্গীরা। তাদের বহরে ছিল তিনটি হেলিকপ্টার। তার মধ্যে দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছলেও প্রেসিডেন্ট রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আবদুল্লাহিয়ান সহ মোট ৯ জনকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিরূপ আবহাওয়া, ঘন কুয়াশার কারণে পাহাড়ি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এতে এর আরোহীদের সবাই নিহত হন। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর তাদের লাশ পাওয়া যায়। প্রেসিডেন্ট রাইসিকে মাশহাদে দাফন করা হলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আবদুল্লাহিয়ানকে দাফন করা হয় রাজধানী তেহরানে শাহ আবদুল আজিম হাসানি সমাধিক্ষেত্রে।
এর আগে সেখানে সরকারি কর্মকর্তা এবং সাধারণ জনতার ভালোবাসায় সিক্ত হন তিনি। রাজধানীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চত্বরে মাশক স্কয়ারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আবদুল্লাহিয়ানের নামাজে জানাজা হয়। ওদিকে প্রেসিডেন্ট রাইসি ও তার সঙ্গীদের মৃত্যুতে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি অথবা চেয়ারপারসনরা। গতকাল শেষ বিদায় জানানোর জন্য সকাল থেকেই পূর্বাঞ্চলীয় শহর বিরজান্দে হাজারো মানুষ অবস্থান নেয়। তাদের হাতে ছিল প্রেসিডেন্ট রাইসি’র ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড। তারা সেই প্ল্যাকার্ড এবং ইরানের পতাকা দোলাচ্ছিলেন। বুধবার রাজধানী তেহরানে প্রেসিডেন্ট রাইসি’র জানাজা পড়ান ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
Download Apps for Android: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews&hl=en&gl=US