চীনের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও তাইওয়ান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন মার্কিন স্পিকার
চীনের ‘ভয়াবহ প্রতিশোধ’ নেয়ার হুমকি সত্ত্বেও সফররত তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের সঙ্গে বুধবার সাক্ষাৎ করবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি।

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক : চীনের ‘ভয়াবহ প্রতিশোধ’ নেয়ার হুমকি সত্ত্বেও সফররত তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের সঙ্গে বুধবার সাক্ষাৎ করবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি। এর আগে গত বছর প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি আকস্মিক সফরে যান তাইওয়ানে। জবাবে সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় সেখানে। চীন আকাশে সামরিক মহড়া দেয়। এবার প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন মধ্য আমেরিকা সফরে রয়েছেন। সেখান থেকে বুধবার তার যাত্রা বিরতির সময় প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ম্যাকার্থির সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হবে। ম্যাকার্থি এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক যথেষ্ট নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। বিশেষ করে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সময় থেকেই বাণিজ্যযুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করে। তারপর দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করছে চীন। নিজেদেরকে সার্বভৌম রাষ্ট্র ঘোষণাকারী তাইওয়ানকে তারা নিজেদের মূল ভূখণ্ড বলে দাবি করছে। প্রয়োজনে সামরিক শক্তি প্রয়োগের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এসব নিয়ে উত্তেজনা তীব্র থেকে তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ বছর কথিত গোয়েন্দা বেলুন নিয়ে তা আরও বৃদ্ধি পায়। বলা হয়, ওই গোয়েন্দা বেলুন ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহে চেষ্টা করছে চীন।
এ অবস্থায় লস অ্যানজেলেসের বাইরে রোনাল্ড রিগ্যান প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরিতে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে সাক্ষাৎ করার কথা ম্যাকার্থির। চীনের জ্বালাময়ী প্রতিক্রিয়া সত্ত্বেও এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইং-সাইয়ের এই সফরের আগেই গত সপ্তাহে চীন কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। বলেছে, ইং-সাই এবং যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় সর্বোচ্চ পদের অধিকারী প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারের মধ্যে সাক্ষাৎ হলে তার জবাবে ‘মারাত্মক প্রতিশোধ’ দেখবে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ান সরকারের মধ্যে সরকারি পর্যায়ের যেকোনো রকম আলোচনা ও যোগাযোগের কঠোর বিরোধী যুক্তরাষ্ট্র।
বেইজিংয়ের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। তবে তাইওয়ানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ও অস্ত্র সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সাই ইং-ওয়েন। তারপর থেকেই এই দ্বীপরাষ্ট্রটির ওপর সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করেছে বেইজিং। লাতিন আমেরিকায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছে তাইওয়ান। এসব অঞ্চলে তাইওয়ানের আছে অল্প কিছু কূটনৈতিক মিত্র। এরই মধ্যে গুয়াতেমালা এবং বেলিজা সফর করেছেন ইং সাই-ওয়েন। সেখানে উভয় দেশের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তবে ওই অঞ্চলে হন্ডুরাস নামে একটি মিত্রকে হারিয়েছে তাইওয়ান। এই দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে চীনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছে হন্ডুরাস। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রেসিডেন্ট সাইয়ের এই সফরের সময়ে শুক্র ও শনিবার তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে উড়ে গেছে চীনের কমপক্ষে এক ডজন যুদ্ধবিমান। তাদের অভিযোগ চীনের বিমান থেকে নিয়মিত তাদেরকে এভাবে হয়রান করা হচ্ছে।