চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ১৪ শতাংশ
১ জন ছাড়া সবার জামানত বাতিল পুনঃভোটের দাবি
প্রথম নিউজ, চট্টগ্রাম : গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ বিজয়ী হয়েছেন। এই নির্বাচনে মোট ভোটারের মাত্র ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ ভোট দিয়েছেন। এতে বিজয়ী প্রার্থী আওয়ামী লীগের নোমান আল মাহমুদ ছাড়া বাকি ৪ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে দুই প্রার্থী পুনঃভোটের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়ামে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কেন্দ্র থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন। নিরুত্তাপ এই ভোটে ৬৭ হাজার ২০৫ ভোটে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী সেহাব উদ্দিন মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ (মোমবাতি) পেয়েছেন ৫ হাজার ৮৭ ভোট। জানা যায়, এই উপনির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৫ লাখ ১৭ হাজার ৬৫২ জন। তাদের মধ্যে ৭৫ হাজার ৩০৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
এ হিসেবে জামানত ফিরে পেতে কোনো প্রার্থীকে অন্তত ৯ হাজার ৪১৩ ভোট পেতে হতো। কিন্তু বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সেহাব উদ্দিন মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৮৭ ভোট, চেয়ার প্রতীকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন ১ হাজার ৮৬০ ভোট, আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি’র কামাল পাশা ৬৭৩ ভোট এবং একতারা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী রমজান আলী ৪৮০ ভোট পান।
তবে অভিযোগ গ্রহণ করার পরও রিটার্নিং অফিসার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। রিটার্নিং অফিসারের এ ব্যর্থতা এ নির্বাচনকে কলুষিত করেছে। নির্বাচন কার্যক্রমকে অকার্যকর করেছে। এ ভোট কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। ফলাফল স্থগিত করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। সেহাব উদ্দিন মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ অভিযোগ করে বলেন, এ আসনের নগরে শতকরা ২-৩ ভাগ ও বোয়ালখালী অংশে ৫-৭ ভাগ ভোটারও ভোট কেন্দ্রে যায়নি। সুতরাং এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী কামাল পাশা সাংবাদিকদের বলেন, এ নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়নি। আমি নির্বাচন বর্জন করিনি। এ আসনে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, নির্বাচন ঘিরে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি। পর্যাপ্ত পুলিশ, আনসার ও র্যাব মোতায়েন ছিল।
পাশাপাশি জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেছেন। কোনো প্রার্থী সেভাবে অভিযোগ করেননি। প্রসঙ্গত, এই আসনের সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ গত ৫ই ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে নির্বাচন কমিশন। এ আসনটি এর আগেও একবার শূন্য হয়েছে ২০১৯ সালে। মহাজোটের শরিক হিসেবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতা মইন উদ্দিন খান বাদল ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচিত হন। কিন্তু তিনি ২০১৯ সালের ৭ই নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। পরে ২০২০ সালের ১৩ই জানুয়ারির উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে সংসদে এসেছিলেন সদ্য প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমদ।