চাকরিচ্যুত ব্যাংকারদের অবরোধ, দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা
প্রথম নিউজ, ঢাকা : সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), ইউনিয়ন ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক থেকে চাকরি হারানো কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের কথা জানিয়েছেন তারা।
রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে নগরীর কর্ণফুলী থানাধীন মইজ্যারটেক এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন চাকরিচ্যুত ব্যাংকাররা। এতে চাকরি হারানো কয়েকশ ব্যাংকার অংশ নেন।
এসময় সড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আন্দোলনকারীরা বেলা ১১টার দিকে সড়ক থেকে উঠে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
চাকরি হারানো আক্তার নামে এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমাদের বেআইনিভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে যাদের চাকরি হয়েছে, তাদের টার্গেট করা হয়েছে। আমরা চাকরি ফেরত চাই। ৩১ অক্টোবরের পর থেকে সরকারের উপদেষ্টা ও জেলা প্রশাসনের কাছে আমাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা কোনো সুরাহা দিতে পারেননি। তাই বাধ্য হয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে হয়েছে। আমরা মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করেছি। তবে দাবি না মানা হলে কঠোর আন্দোলনে নামব। কারণ আমাদের প্রায় সবার চাকরির বয়স শেষ। এখন আমাদের আর কোনো পথ খোলা নেই।’
আবুল বাশার নামে চাকরি হারানো সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গত কয়েক মাসে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক থেকে অন্তত ১ হাজার ২০০ জন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে এ চাকরিচ্যুতি করা হয়। আমরা চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে সড়কে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছি।’
নজরুল ইসলাম নামে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের অপর এক কর্মকর্তা জানান, গত ৩১ অক্টোবর এক নোটিশে ৬৭২ জন কর্মকর্তাকে ছাঁটাই করা হয়। ওইদিন কর্মকর্তাদের ই-মেইলের মাধ্যমে চাকরিচ্যুতির বিষয়টি জানানো হয়।
জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৬৭২ জন, ইউনিয়ন ব্যাংকের ২৬২ জন ও ইসলামী ব্যাংকের ২৫০ জন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
এদিকে, ঘণ্টা দেড়েক চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক বন্ধ থাকায় সড়কের দুই পাশে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় লোকজনকে।
পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম শহরে আসার জন্য সকালে বাড়ি থেকে বের হই। মইজ্যারটেক এলাকায় ব্যাংকারদের বিক্ষোভের কারণে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যানজটের কারণে গাড়ি থেকে নেমে যাই। পরে যানজট এড়িয়ে আরেকটি গাড়িতে করে চট্টগ্রাম শহরে আসি।’
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন ব্যাংক থেকে চাকরি হারানো কর্মকর্তারা চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভের পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করেন। পরে আমরা তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে সড়কে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক আছে।’