গাজীপুর থেকে নোয়াখালীর যুদ্ধাপরাধী শেখ ফরিদ গ্রেপ্তার

 গাজীপুর থেকে নোয়াখালীর যুদ্ধাপরাধী শেখ ফরিদ গ্রেপ্তার

প্রথম নিউজ, নোয়াখালী : ১৯৭১ সালে নোয়াখালীতে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকায় যুদ্ধাপরাধী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি শেখ ফরিদকে (৭০) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

বুধবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় গাজীপুরের শ্রীপুর বাজার এলাকায় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-২ এর একটি দল।

শেখ ফরিদ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মৃত আফজাল হক ওরফে আলী আজমের ছেলে।

র‌্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শিহাব করিম জানান, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় নোয়াখালী এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন শেখ ফরিদ। তিনি ও অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীরা অগ্নিসংযোগ, পাশবিক নির্যাতন ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে সরাসরি জড়িত ছিলেন।

শেখ ফরিদ তার সহযোগী রাজাকারদের নিয়ে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানার বাঞ্চারাম গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা এবং নির্যাতনসহ তাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেন। এছাড়াও ১৯৭১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর বামনী বাজারে মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, মুক্তিযোদ্ধা শরাফত আলী, মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন ফারুক, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওহাবসহ ১০/১২ জনের একটি দল একটি অপারেশন শেষে ১৫ নম্বর সুইচ গেইট সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেন। এসময় একটি হেলিকপ্টার উড়ে যেতে দেখে নিরাপত্তার কারণে তারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে ১৬ নম্বর সুইচ গেটের দিকে চলে যান। তখন যুদ্ধাপরাধী শেখ ফরিদসহ অন্যান্য রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের কথা বসুরহাট ও চাপরাশির হাট রাজাকার ক্যাম্পে জানিয়ে দেন। 

বসুরহাট ও চাপরাশিরহাট রাজাকার ক্যাম্প থেকে পাকিস্তানি সেনা ও যুদ্ধাপরাধী শেখ ফরিদসহ ১০০/১২০ জন সশস্ত্র রাজাকার মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে ছয়জন মুক্তিযোদ্ধা, একজন পথচারী ও দুইজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন। সেই সময় শেখ ফরিদসহ অন্যান্য যুদ্ধাপরাধী রাজাকাররা ধান ক্ষেতে লুকিয়ে থাকা নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজে বের করে গুলি করে হত্যা করেন।

২০১৭ সালে শেখ ফরিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর থেকে তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে আত্মগোপন করেন। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।