খুলনায় তারুণ্যের সমাবেশে স্বজন হারানো মানুষের আর্তনাদ
খুলনায় তারুণ্যের সমাবেশে কথা বলেছেন বঞ্চিত, লাঞ্ছিত, নির্যাতিত ও হত্যার শিকার ব্যক্তিদের স্বজনরা। এ সময় তারা স্বজনহারানোর ব্যথায় কান্নায় ভেঙে পড়েন।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: খুলনায় তারুণ্যের সমাবেশে কথা বলেছেন বঞ্চিত, লাঞ্ছিত, নির্যাতিত ও হত্যার শিকার ব্যক্তিদের স্বজনরা। এ সময় তারা স্বজনহারানোর ব্যথায় কান্নায় ভেঙে পড়েন। আজ সোমবার খুলনায় তারুণ্যের সমাবেশে বক্তব্যকালে তারা উপস্থিত নেতাকর্মীদের কাছে আর্তনাদ করে স্বজন হারানোর বিচার চান।
গুম থেকে ফেরত আসা এক নেতা বলেন, আমি কোর্টে হাজিরা দিয়ে ফেরার সময় কয়েকজন লোক আমাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে গেল। তারা আমাকে কালো টুপি পরিয়ে নিয়েছিল। এরপর একটি ছোট ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করে। আমাকে তারা নানা কিছুর হুমকি দেয়। দুই মাস ১৮ দিন পর আমাকে ঢাকায় নিলো। আমি ভাবলাম আমার আজ বুঝি শেষ দিন। তারপর তারা ঢাকা কদমতলী থানায় ফেলে যায়। এরপর আমি ওই থানার ওসির মাধ্যমে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করি। আমি চাই, আর যেন কেউ গুমের শিকার না হয়। আমি আমার নির্যাতনের বিচার চাই।
আন্দোলনে করতে গিয়ে নিহত হওয়া এক নেতার শিশু কন্যা বলে, আমি আমার বাবা হত্যার বিচার চাই। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন, যাতে আমি ভালো মানুষ হতে পারি।
বাগেরহাটে নিহত যুবদল নেতা নুরে আলম কালু ভুঁইয়ার স্ত্রী বলেন, আমি আমার বিচার পাইনি। কারণ, খুনিরা গ্রেফতার হওয়ার পর কিছু দিনের মধ্যেই জামিন পেয়ে গেছে। জানি এই সরকারের আমলে আমার স্বামীর খুনের বিচার হবে না। তাই আমি আমার মতো রাজপথে থেকে এই জুলুমবাজ সরকারের পতন ঘটাব। তারপর আমার স্বামীর বিচার করব।
হত্যার শিকার মিতুর স্ত্রী বলেন, আমার মতো কারো পরিবার যেন এ ঘটনার শিকার না হয়। আমার পরিবারের পার্শ্বে বিএনপি দাঁড়িয়েছে। আমার ছোট সন্তান আছে। তারা অনেক কষ্টে আছে। তাদের বাবা নেই। আওয়ামী লীগ নাকি টাকা দিয়ে থানা কিনে নিয়েছে। তাই আমার স্বামী হত্যার বিচার পাব না।
হত্যার শিকার হওয়া নাজমুলের স্ত্রী বলেন, আমি আমার শিশু দুইটার দিকে তাকিয়ে স্বামীকে ফেরত বলেছিলাম। কিন্তু তারা আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দেয়নি। তারা তাকে হত্যা করেছে। তারা লাশ রাস্তার পাশে পড়ে ছিল। আমি বলতে চাই, একটি নাজমুল থেকে হাজার হাজার নাজমুলের জন্ম হয়েছে। আমি বারবার কারাবরণ করেছি। আমি বিচারের আশায় এখনো পথ চেয়ে বসে আছি। আমি আমার তিন সন্তানের স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই। এই সরকারের পদত্যাগ চাই।
পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও চাকরি না পাওয়া তরুণ রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আমি বিমানবাহিনীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলাম। কিন্তু ভেরিফিকেশনে আমার পরিবার আওয়ামী লীগ ঘরণার না হওয়ায় আমাকে চাকরি দেয়া হয়নি। আমি এই সরকারকে বলতে চাই, এই দিন শেষ নয়, আরো দিন আসবে।