খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসায় আইনে কোনো বাধা নেই: মির্জা ফখরুল
প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসায় আইনে কোনো বাধা নেই বলে জনিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় দলীয় প্রধানের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি এসব তথ্য জানান।
জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকলেও খালেদা জিয়ার মনোবল শক্ত আছে উৃল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। তার শারীরিক নানা জটিলতার মধ্যে এই মুহূর্তে লিভারের সমস্যাই সবচেয়ে প্রকট। দেশে চিকিৎসকরা খালেদা জিয়াকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিচ্ছেন। কিন্তু এখানে তার চিকিৎসা সম্ভব নয়। কালবিলম্ব না করে অবিলম্বে বিদেশে পাঠানো দরকার। উনার মেডিকেল বোর্ড স্পষ্ট করে বলেছে যে, ম্যাডামকে অ্যাডভান্স চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানিতে পাঠাতে হবে। অতিদ্রুত তাকে বিদেশে পাঠানো জরুরি।
বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, চিকিৎসকদের কাছে থেকে সবশেষ তথ্য জেনেছি, ম্যাডামের ফারদার ইম্প্রুভ হয়নি। ভালো কিছুই হয়নি তার। তার অবস্থা এখনো আগের মতোই রয়েছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি যাবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। এটা পরিষ্কার করে বলছি, আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাচ্ছি না।
খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য না পাঠালে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করার ইঙ্গিত করেছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের সংসদ থেকে পদত্যাগের বিষয়টি দলীয় সিদ্ধান্ত। তারা তো বিএনপির সংসদ সদস্য। দল যদি মনে করে, তাহলে তারা পদত্যাগ করবে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিএনপির পক্ষে থেকে প্রধানমন্ত্রী কিংবা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে কি না জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে তো আমরা প্রতিটি অনুষ্ঠান থেকে কথাবার্তা বলছি। সেগুলো তো সরকারের কাছে যাচ্ছে। তবে, এই প্রধানমন্ত্রী কিংবা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি।
শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার দাবিতে চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, হাফ ভাড়ার দাবি তো যৌক্তিক। আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন এয়ারে ১১৫ টাকা ভাড়ায় ঢাকা থেকে করাচি গিয়েছি। বাসেও হাফ ভাড়া দিয়েছি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফখরুল জানান, ম্যাডামের চিকিৎসকেরা কথা বলবেন না। রোগীর তথ্য নিয়ে কথা বলার বিষয়টি তাদের পেশাগত এথিক্সে নেই। সব দায়িত্ব নিয়ে বলছি, অবিলম্বে ম্যাডামকে কালবিলম্ব না করে বিদেশে পাঠানো দরকার। দেশনেত্রীর জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। এত বেশি মূল্যবান যে, গণতন্ত্রের উন্নয়নের জন্য, স্থিতিশীল অবস্থার জন্য তার সুস্থ হয়ে ফিরে আসা জরুরিভাবে দরকার।
বেগম খালেদা জিয়াকে সরকারের ব্যক্তিরা কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এমন একটা রাষ্ট্র আমাদের গড়ে তোলা উচিত যে রাষ্ট্রে গণতন্ত্রের চর্চা হবে, সুন্দর সমাজ হবে।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে বতর্মান নিবাচন কমিশনের মেয়াদ শেষে নতুন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির আহ্বানে সংলাপে বিএনপি যাবে কি না, এমন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা এই সংলাপে যাবো না। এই সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনেও যাবো না।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: