খালেদা জিয়া ‘মিথ্যা’ মামলায় গৃহবন্দি: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি চার বছর ধরে প্রথমে কারাগারে, এখন গৃহবন্দি। বিএনপির ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। তবুও দেশকে রক্ষার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পরাজিত করতে হবে।’

খালেদা জিয়া ‘মিথ্যা’ মামলায় গৃহবন্দি: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি চার বছর ধরে প্রথমে কারাগারে, এখন গৃহবন্দি। বিএনপির ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। তবুও দেশকে রক্ষার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পরাজিত করতে হবে।’ বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাবেক ও বর্তমান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারবিরোধী চলমান আন্দোলন আরও বেগবান করতে দল সমর্থিত অন্তত চার হাজার সাবেক ও বর্তমান স্থানীয় জনপ্রতিনিধির (উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর) সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় করবে বিএনপি। প্রথম দিনে রংপুর বিভাগের আড়াইশ প্রতিনিধি এই সভায় অংশ নেন। এ সময় লন্ডন থেকে স্কাইপের মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সভায় যুক্ত হন। চলমান যুগপৎ আন্দোলন সম্পর্কে তাদের মতামত নেন তিনি। সভায় সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিরা বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার বিএনপির সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে জানান। তারা বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। প্রান্তিক সাধারণ মানুষও এই সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ। তারাও একটি বড় দল হিসাবে বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। এজন্য আন্দোলন ছাড়া বিকল্প নেই। কঠোর কর্মসূচি দিতে হবে। রাজপথে থেকে তা সফল করার অঙ্গীকার করেন জনপ্রতিনিধিরা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন না হলে জনগণের অস্তিত্বই বিপন্ন হবে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে, আন্দোলন শুরু হয়েছে। আন্দোলন এখন ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত গেছে। এই অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে না পারলে বাংলাদেশের মানুষের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, চলমান আন্দোলনে ইতোমধ্যে ১৭ জন নেতাকর্মী রাজপথে প্রাণ দিয়েছেন। প্রতিদিন এই অত্যাচার-নির্যাতনের সীমা ছাড়িয়েছে। দেশকে রক্ষা, মানুষকে রক্ষা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ ভয়াবহ দানবীয় সরকারের পরাজয় ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব। সরকার পতনের ১০ দফা দাবির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ১০ দফা দাবির মধ্যে আছে, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। বিএনপির তরফ থেকে ২৭ রাষ্ট্র সংস্কারের কর্মসূচিও দিয়েছি। এই বিষয়গুলোকে জনগণের কাছে ছড়িয়ে দিতে হবে। জনগণকে আরও সম্পৃক্ত করতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের ভোট কারচুপি এবং দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি পরিস্থিতিতে জনগণের দুর্বিষহ অবস্থার বিষয়গুলো তুলে ধরেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের দুর্নীতির কারণে তেল, গ্যাস, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বেড়েই চলছে।  বেলা সাড়ে ৩টা থেকে শুরু হয়ে মতবিনিময় সভা চলে রাত পর্যন্ত। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক প্রমুখ।  সারা দেশের সাবেক ও বর্তমান স্থানীয় জনপ্রতিনিদের সঙ্গে ১০টি মতবিনিময় সভা করার কথা রয়েছে। এর মধ্যে ২৭  ফেব্রুয়ারি খুলনা বিভাগ, ২৮ ফেব্রুয়ারি সিলেট ও খুলনা বিভাগ, ১ মার্চ বরিশাল বিভাগ, ২ মার্চ ঢাকা বিভাগ, ৫ মার্চ ফরিদপুর ও কুমিল্লা বিভাগ, ১৩ মার্চ চট্টগ্রাম বিভাগ, ১৪ মার্চ চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগ এবং ১৫ মার্চ রাজশাহী বিভাগ এবং ১৬ মার্চ ময়মনসিংহ বিভাগ। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রতিটি সভা শুরু হবে বেলা ৩টায়।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: