‘কলেজে পড়তে হলে বাধ্যতামূলক ছাত্রলীগ করতে হবে’
‘কলেজে পড়তে হলে বাধ্যতামূলক ছাত্রলীগ করতে হবে’
প্রথম নিউজ, কক্সবাজার: কক্সবাজার সরকারি কলেজে পড়তে হলে ছাত্রলীগ করা বাধ্যতামূলক। এ কলেজের ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের পতাকাতলে আনতে না পারলে সিনিয়রদের নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে বলেছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসাইন।
বুধবার (১৭ আগস্ট) ২০০৫ সালের আগস্টে সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলায় জড়িতদের বিচার সম্পন্ন ও মদদদাতাদের শাস্তির দাবিতে কক্সবাজার সরকারি কলেজের কালো পতাকা, মৌন মিছিল ও সমাবেশে দেওয়া বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
বক্তব্যে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসাইন বলেন, এ দেশে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। এই কলেজের উন্নয়ন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিও ছাত্রলীগের নেত্রী ছিলেন। এই সরকার ছাত্রলীগের সরকার।
এই কলেজের ক্যাম্পাসে, কলেজের শিরা-উপশিরায় ছাত্রলীগের হক রয়েছে। সুতরাং আপনারা যদি ছাত্রলীগের হকের ওপর দাঁড়িয়ে পড়ালেখা করতে চান তবে কেন ছাত্রলীগ করবেন না। আপনাদের বাধ্য হয়ে ছাত্রলীগ করতে হবে। এই কলেজের ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দকে আল্টিমেটাম দিয়ে যাচ্ছি, আমরা যদি পরবর্তীতে এসে এই ক্যাম্পাস কানায় কানায় ছাত্রলীগ কর্মী না দেখি, তবে আপনাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।
এদিকে ওই সমাবেশের দুই দিন পর শনিবার (২০ আগস্ট) ছাত্রলীগ সভাপতির বক্তব্যটি ভাইরাল হলে কক্সবাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বক্তব্যটি অনেকে ইতিবাচক হিসেবে নিতে পারলেও বেশির ভাগ মানুষ নেতিবাচক মন্তব্য করছেন।
ফেসবুকে নুরুল আবছার নামে একজন লিখেছেন, কর্মীর অভাব পড়লেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর এমন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া যায় না। আবদুল্লাহ আল মামুন নামের একজন লিখেছেন, স্বৈরাচারী কথা।
আবার বক্তব্যকে ইতিবাচক বলে তারেক মাহমুদ রনি নামে বলেন, এক সময় কক্সবাজার সরকারি কলেজে ছাত্রশিবির করা বাধ্যতামূলক ছিল। কত আওয়ামী পরিবারের সন্তান নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তা কারও অজানা নয়। সেই কলেজে ছাত্রলীগের পতাকা উড়ুক যুগের পর যুগ। এস এম সাদ্দাম ভালো মন্তব্য করেছেন।
এক সাংবাদিক নেতা তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, আজ যারা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বক্তব্যের সমালোচনা করছেন, আপনারা কি ভুলে গেছেন সেই সময়ের কথা? শিবিরের হাতে কত প্রগতিশীল ছাত্রনেতার রক্ত ঝরেছে কক্সবাজার কলেজ ক্যাম্পাসে। আমি নিজেও কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকালে তাদের হাতে কত হেনস্তার শিকার হয়েছি, এমনকি আমাকে পরীক্ষা পর্যন্ত দিতে দেওয়া হয়নি। ধন্যবাদ সাদ্দামকে, তবে কথা আর কাজের মধ্যে যেন মিল থাকে।
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসাইন বলেন, কলেজের কিছু সিনিয়র শিক্ষক জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করতে চাচ্ছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের তো কোনো স্বাধীনতাবিরোধী রাজনীতির দিকে ধাবিত করা যাবে না। এজন্য আমার ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ যারা আছে, তাদের বলেছি শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করে পড়ালেখার পাশাপাশি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সবাইকে আহ্বান করতে হবে। তিনি আরও বলেন, এটি আমাদের নৈতিক অধিকার। দেশের গর্বিত অংশীদার ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে। সেই সংগঠনের প্রচার আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews