কার্যালয়ের ভেতরে গিয়ে হতভম্ব বিএনপি নেতাকর্মীরা

কার্যালয়ের ভেতরে গিয়ে হতভম্ব বিএনপি নেতাকর্মীরা
কার্যালয়ের ভেতরে গিয়ে হতভম্ব বিএনপি নেতাকর্মীরা

প্রথম নিউজ, ঢাকা: টানা ৪ দিন পর খুলে দেয়া হয়েছে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়। গতকাল দুপুর ১টা ২০ মিনিটে নয়াপল্টনের কার্যালয়ের গেট খুলে দেয় পুলিশ। এর আগে বেলা ১১টার পর নয়াপল্টনের দুই পাশের রাস্তার ব্যারিকেড তুলে নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত বুধবার বিএনপি’র নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা অফিসে প্রবেশ করেন। এরপর থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল কার্যালয়টি। গতকাল দুপুরে কয়েকজন আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান দলটির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে কার্যালয়ে প্রবেশের পর কার্যালয় ঘুরে দেখেন তিনি। এ সময়  তিনি অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার কার্যালয়ে তাণ্ডব চালানো হয়েছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র খোয়া গেছে।

গতকাল দুপুরে সরজমিন দেখা যায়, কার্যালয়ের প্রবেশ মুখে পড়ে আছে অভিযানকালে সৃষ্ট আবর্জনা। সিঁড়িতে পড়ে আছে নানা ছাই, ছেঁড়া জুতা, ছেঁড়া পোশাক। ভাঙা বিভিন্ন আসবাবপত্র। দ্বিতীয় তলার প্রতিটি রুমের দরজা ভাঙা। পড়ে আছে ভাঙা তালা। চেয়ারপারসনের অফিসে আসবাবপত্র ভাঙাচুরা। এলোমেলো পড়ে আছে কাগজপত্র। তৃতীয়তলায় বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুলের রুমের দরজা অর্ধেক নেই। ভেতরে ময়লা কাগজপত্র। দপ্তরের রুমে নেই কোনো ইলেক্ট্রনিক জিনিসপত্র, ভাঙা টেবিল ও চেয়ার। ড্রয়ার ভাঙা এলোমেলো কাগজপত্র। রুহুল কবির রিজভীর কক্ষের বিছানা এলোমেলো। ছিন্নভিন্ন ভাবে পড়ে আছে  কাগজপত্র। যেন পুরো রুমটাই ধ্বংসস্তূপ।  এমরান সালেহ বলেন, দুইদিন আগে নিরাপত্তারক্ষীর কাছে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফটকের চাবি বুঝিয়ে দেয় পুলিশ। কিন্তু নেতাকর্মীদের কার্যালয়ে ঢুকতে দেয়া হয়নি। তাছাড়া ঢোকার মতো পরিস্থিতিও ছিল না। গতকাল দুপুরে কার্যালয়ে ঢুকতে পেরেছেন তারা।

তিনি বলেন, চারদিন পর আমরা আমাদের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকতে পেরেছি। বিএনপি’র গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার ও তার অনুগত প্রশাসন আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। দলীয় চেয়ারপারসনের কক্ষের দরজা ভেঙেছে। কক্ষের জিনিসপত্র নেই। দলের ভাইস চেয়ারম্যানের দপ্তরের স্কাইপের মনিটর, সিপিইউ, ফাইলপত্রসহ সবকিছু নিয়ে গেছে। হিসাব বিভাগে কম্পিউটার, সিপিইউসহ কিছু নেই। টাকা রাখার ড্রয়ার ভাঙা। সেখানে টাকা পাওয়া যায়নি। চেক বই পাওয়া যায়নি। কম্পিউটার, সিপিইউ, প্রিন্টার, স্ক্যানার, ল্যাপটপ খোয়া গেছে। ফাইলপত্রগুলো নেই। ছাত্রদল, যুবদল, কৃষক দল, মহিলা দলসহ  অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের দপ্তরগুলোও তছনছ করা হয়েছে। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এমরান সালেহ বলেন, সরকার দেশকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। একইভাবে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও তারা লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। আমাদের চলমান আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে তারা এই কাজ করেছে। তিনি বলেন, এখানে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে এখন বলা যাচ্ছে না। কী কী জিনিস খোয়া গেছে, তার তালিকা করা হচ্ছে। এরপর দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এমরান সালেহ প্রিন্স সাংবাদিকদের আরও বলেন, বিএনপি’র অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতাদের তাদের স্ব-স্ব কার্যালয়ের ক্ষয়ক্ষতি ও লুটপাটকৃত জিনিসপত্রের তালিকা করতে বলেছি। পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom