Ad0111

 কন্যা শিশু বিক্রির টাকায় সংসার চলছে আফগানিস্তানে

 কন্যা শিশু বিক্রির টাকায় সংসার চলছে আফগানিস্তানে
কন্যা শিশু বিক্রির টাকায় সংসার চলছে আফগানিস্তানে

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : খাদ্য সংকট কতটা চরমে পৌঁছালে একজন বাবা তার কন্যা সন্তানকে বিক্রি করতে বাধ্য হন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে একজন বাবার এছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। দেশে ভয়াবহ আর্থিক সংকট তৈরি হওয়ায় আফগানিস্তানের অনেক নাগরিককেই এখন এমন মর্মান্তিক বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

আফগানিস্তানের ছোট্ট শিশু পারওয়ানা মালিক। বয়স মাত্র ৯ বছর। ধূসর চোখ আর উজ্জ্বল চেহারার এই মেয়েটির দিন কেটে যায় বন্ধুদের সঙ্গে হেসে খেলেই। সে হয়ত বুঝতেই পারেনি কি ঘটতে চলেছে তার ভাগ্যে। খেলা ছেড়ে ঘরে ফিরতেই ঘোর অন্ধকার তার চোখেমুখে। নিমিষেই চাপা পড়ে যায় ছোট্ট মুখের হাসি। সে জানতে পারে এক বৃদ্ধের কাছে টাকার বিনিময়ে তার বাবা-মা বিয়ে ঠিক করেছে।

৯ বছরের এই শিশুটির বিয়ে হবে ৫৫ বছর বয়সী এক লোকের সঙ্গে। এমনটা ভাবাই যায় না। কিন্তু এমন ঘটনাই ঘটছে আফগানিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বাদগিস প্রদেশের অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রে চার বছর ধরে বসবাস করছে পারওয়ানার পরিবার।

পারওয়ানাকে কিনে নেওয়া ওই লোকটি নিজের বয়স ৫৫ বছর দাবি করলেও শিশুটির চোখে সে ‘বুড়ো লোক’। তার চুল ও দাঁড়ি পেকে গেছে। তাকে লোকটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর মারধর করবে বলেও ভয় পাচ্ছে সে। গত ২২ অক্টোবর সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাতকারে কথাগুলো বলছিল মেয়েটি।

কিন্তু পারওয়ানার বাবা-মার কাছে বিকল্প কোনো পথ নেই। কয়েক মাস আগেই তাদের ১২ বছর বয়সী আরেক কন্যা সন্তানেরও একই পরিণতি হয়েছে।

পারওয়ানার বাবা আব্দুল মালিক জানান, তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা আট। তিনি রাতে ঘুমাতে পারেন না। মেয়ের জন্য অনুশোচনা হয় তার। লজ্জা পান এ ঘটনার জন্য। কিন্তু উপায় নেই, কাজের জন্য অনেক ঘুরেছেন। আত্মীয়-স্বজনদের কাছে হাত পেতেছেন। এমনকি তার স্ত্রী ভিক্ষাও চেয়েছেন। এখন আর তার কোনো পথ নেই। পরিবারের অন্য সদস্যদের বাঁচাতেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। তবে সংবাদ মাধ্যমে নিজের পরিবারের অবস্থা অকপটে স্বীকার করেছেন তিনি। এমনকি তার পরিবারের অন্য সদস্য বা পাওয়ানার ছবি তোলার অনুমতিও দিয়েছেন।

মানবাধিকারকর্মী মোহাম্মদ নায়েম নাজেম বলেন, আফগানিস্তানে দিনের পর দিন কন্যা শিশু সন্তান বিক্রির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, খাদ্য ও কাজের অভাব এবং বিভিন্ন সংকটে থাকা পরিবারগুলো এমন সিদ্ধান্তকেই সঠিক বলে মনে করছে।

চলতি বছরের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণে নেয় তালেবান। এরপর তারা নতুন সরকার গঠন করলেও এখনও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে দেশটি। দেখা দিয়েছে চরম খাদ্য সংকট। আর এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কন্যা শিশুরাও। ফলে আফগানিস্তানে ক্রমশ বাড়ছে ‘শিশুবধূ’র সংখ্যা।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news