এমসি কলেজে ধর্ষণ: এক মাসের মধ্যে মামলা দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে বদলির নির্দেশ

আদেশের কপি হাতে পাওয়ার একমাসের (৩০ দিনের) মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্টদের এই আদেশ বাস্তবায়নের জন্য বলেছেন আদালত।

এমসি কলেজে ধর্ষণ: এক মাসের মধ্যে মামলা দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে বদলির নির্দেশ

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সিলেটে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলা দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদেশের কপি হাতে পাওয়ার একমাসের (৩০ দিনের) মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্টদের এই আদেশ বাস্তবায়নের জন্য বলেছেন আদালত।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম লিটন। আদালত পরিবর্তন চেয়ে রিট করা আবেদনের শুনানি নিয়ে মামলাটি কেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুলে স্থানান্ততরের নির্দেশ দেওয়া হবে না সংক্রান্ত রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন, ব্যারিস্টার আফরোজা মিতা, ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম লিটন ও কামরুন মাহমুদ দিপা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ। ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম লিটন আদেশের বিষয়ে বলেন, এমসি কলেজের ধর্ষণের ঘটনায় হাইকোর্টে জারি করার রোল চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বদলিতে সরকারের ব্যর্থতাকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। একইসাথে, রায়ের কপি হাতে পাওয়ার এক মাসের মধ্যে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে বলেছেন একটি গেজেট প্রকাশ করতে মামলা স্থানান্তরের বিষয়ে।

এর আগে গত ১৬ আগস্ট সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে এক তরুণীকে গণধর্ষণের মামলার বিচার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে করার নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর আগে গত ১ আগস্ট সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে এক তরুণীকে গণধর্ষণের মামলায় দুই অভিযোগের বিচার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে রুল জারি করেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে আজ এই রায় দেন।

আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, বর্তমানে এ মামলার বিচারকাজ সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, গত বছরের জানুয়ারিতে করা ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয় চলতি বছরের মে মাসে। তবে এ পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি। এ কারণে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার চেয়ে মামলার বাদী ওই গৃহবধূর স্বামী এ রিট করেন। এর আগেও ২০২১ সালের গত ৩ ফেব্রুয়ারি আদালত পরিবর্তন চেয়ে রিট করা হয়েছিল। এখন আবারও একই আবেদন করা হয়েছিলো।

২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় মামলা করেন। এ মামলায় আটজনকে অভিযুক্ত করে গত ৩ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। তারা হলেন- সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল, মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজন, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম।

এই আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে আছেন। গত ১৭ জানুয়ারি এ মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোহিতুল হক। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়রা আদালতে পৃথক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। পরে বাদীপক্ষ হাইকোর্টে আসলে দুটি মামলা এক আদালতে চলবে বলে আদেশ দেন হাইকোর্ট।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom