Ad0111

ইসি আইনের উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অপপ্রচারে নেমেছে বিএনপি: কাদের

আজ বুধবার বিকেলে এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

ইসি আইনের উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অপপ্রচারে নেমেছে বিএনপি: কাদের
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইন প্রণয়নের মহৎ উদ্যোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি নেতারা বিভ্রান্তিকর মন্তব্য ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপিসহ একটি চিহ্নিত মহল দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষিত নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের মহৎ উদ্যোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতে, তাদের চিরাচরিত অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের অপরাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছে।’

আজ বুধবার বিকেলে এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। তিনি বিএনপির এ অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহ, সমাজের বিশিষ্টজন ও সংশ্লিষ্টদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান সরকার নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে এ সংক্রান্ত খসড়া আইন অনুমোদনও পেয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘দেশের বিশিষ্টজন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহ সংবিধানের নির্দেশনা মেনে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগকে যেখানে স্বাগত জানিয়েছেন, সেখানে বিএনপি ও তাদের দোসর দেশবিরোধী অপশক্তি দূরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য দিয়ে করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে।’

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংসদীয় রীতি অনুযায়ী খসড়া আইনটি সংসদে উত্থাপনের পর আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। সেখান থেকে সুপারিশ আকারে সংসদের বৈঠকে উঠবে এবং সংসদীয় বিধান অনুযায়ী সংসদে আলোচনার মধ্য দিয়ে আইনটি চূড়ান্ত হবে। জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল এবং বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যরা তাদের মতামত ও প্রস্তাব উপস্থাপনের সুযোগ পাবেন। অথচ গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার না মেনে পূর্বনির্ধারিত দূরভিসন্ধি অনুযায়ী বিএনপি নেতারা এ আইন নিয়ে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করতে শুরু করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল ও স্বৈরতন্ত্রের গর্ভে জন্ম নেওয়া এবং ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের আবর্তে পরিচালিত বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান সবসময়ই গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়াবিরোধী। যে কোনো উপায়ে ক্ষমতা দখল ও গোষ্ঠীস্বার্থ চরিতার্থের অভিপ্রায়েই বিএনপির রাজনৈতিক গতিপথ নির্ণয় করা হয়। তাই বিএনপি নেতারা নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের উদ্যোগকে স্বাগত না জানিয়ে বিষয়টি নিয়ে অপরাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছে।’

কাদের বলেন, ‘আইনটি নিয়ে বিএনপি নেতাদের সুস্পষ্ট ধারণা না থাকায় তারা অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছে। কারণ তাদের জন্মই হলো সাংবিধানিক ও প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করে চোরাগুপ্তা পথে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে। এই আইন প্রণয়ন নিয়ে কোনো ধরনের লুকোচুরি করা হয়নি। রাষ্ট্রপতির উদ্যোগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে এ বিষয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু গণতান্ত্রিক রীতি ও প্রক্রিয়াকে ভয় পায় বলেই বিএনপি সংলাপে অংশ নেয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে সব স্টেকহোল্ডার তথা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ই ২০১২ ও ২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের আলোকে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা ও মতামত গ্রহণের মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। ওই দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে অংশ নেওয়া সব রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশন গঠন আইন প্রণয়নের দাবি জানায়। বিএনপিও তখন অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছিল। নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সদ্য সমাপ্ত সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে। আওয়ামী লীগও সংলাপে অংশগ্রহণ করে এই আইন প্রণয়নের প্রস্তাবনা উপস্থাপন করে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ও সুদৃঢ় ভিত্তি রচনায় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে এ দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়। গণতন্ত্রের শিশুকে আতুড় ঘরেই হত্যা করা হয়। এরপর দীর্ঘ স্বৈরশাসনের নাগপাশে আবদ্ধ হয় বাংলাদেশ। অতঃপর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়।’

‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রণীত সংবিধানে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও কোনো সরকারই এই আইন প্রণয়নে উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। একমাত্র বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারই টেকসই গণতন্ত্রের শক্তিশালী কাঠামো বিনির্মাণে নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন’ যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন আইন নিয়ে যে খসড়া অনুমোদিত হয়েছে, সে সম্পর্কে গঠনমূলক আলোচনা ও দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানাচ্ছি।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news