আগামীকাল মহাসমাবেশ থেকে সরকারকে আল্টিমেটাম দিবে বিএনপি
প্রথম নিউজ, ঢাকা: আগামীকাল ২৭ জুলাই সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। গত শনিবার (২২ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই মহাসমাবেশের জন্য নয়াপল্টন অথবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চেয়েছে তারা।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় আগামীকাল ২৭ জুলাই স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ধরনের শোডাউনের মধ্য দিয়ে সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিবে দলটি। রাজধানীতে তারা ক্ষমতাসীনদের শক্তি দেখাবে।
এই মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে সরকার পতনে এক দফা আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে যেতে পারে। বিএনপির টার্গেট এই মহাসমাবেশে অন্তত ১০ লক্ষ লোকের সমাগম। সেই লক্ষেই দলটির ঢাকা বিভাগসহ সব বিভাগের শীর্ষপর্যায়ের নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করা হচ্ছে দফায় দফায় প্রস্তুতি মিটিং। গতকাল রাতেও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বাসভবনে মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষে খিলগাঁও, মতিঝিল, শাহজানপুর ও রমনা থানার প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই মিটিংয়েও মির্জা আব্বাস নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ উপস্থিতি থাকার কঠোর বার্তা দিয়েছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গতকাল মহাসমাবেশ সফল করার জন্য নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে লন্ডনে ভার্চুয়াল বক্তব্য রেখেছেন। এই মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সভাপতিত্ব করবেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকার সাবেক মেয়র মির্জা আব্বাস।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামীকালের মহাসমাবেশ থেকে সরকারকে প্রথমে পদত্যাগের জন্য শর্টটাইমের আল্টিমেটাম দিবে বিএনপি। সেটি হতে পারে ৪৮ ঘণ্টা। এর মধ্যে সরকার দাবি মেনে না নিলে লাগাতার এক সপ্তাহের কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি। সেই কর্মসূচির মধ্যে থাকতে পারে হরতাল, অবরোধ, ঘেরাও, অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন।
মহাসমাবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আগামীকাল ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে বিএনপি’র উদ্যোগে মহাসমাবেশ সফল ও সার্থক করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বিএনপি’র এক দফা দাবির সাথে দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও শ্রমজীবী মানুষসহ সর্বস্তরের জনগণ সমর্থন জানিয়েছে। বিএনপি’র মহাসমাবেশে মানুষের স্বতস্ফূর্ত ঢল নামবে।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল রাজধানীতে এক সমাবেশে সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আমরা ২৭ তারিখে যে মহাসমাবেশ ডেকেছি সেই মহাসমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ। কোনো চক্রান্ত করে, কোনো ষড়যন্ত্র করে, কোনো সহিংসতা করে এই মহাসমাবেশকে নস্যাৎ করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, ‘আমি আহ্বান জানাতে চাই কর্তৃপক্ষের কাছে যে, আমাদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার সমস্ত ব্যবস্থা আপনারা (সরকার) করবেন। অন্যথায় সব দায়দায়িত্ব সরকারকে, কর্তৃপক্ষকে এবং যারা দায়িত্বে আছেন তাদেরকে বহন করতে হবে।’
এ দিকে রাজধানীতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ বড় দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বিপরীত মেরুর দুই রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিকে ঘিরে এই সংঘাত ও সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ওই দিন রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিএনপির তরফ থেকে সংঘাতের আশঙ্কা করে ক্ষমতাসীনদের কর্মসূচির তারিখ পরিবর্তনের আহ্বান জানানো হয়েছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগ সংঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে। কোনোও উসকানি দেবে না বলেও আশ্বস্ত করা হয়েছে।