আইএমএফ প্যাকেজ ছাড়া দেউলিয়া হতে পারে পাকিস্তান

কারণ, জুনের পরে দেশটির হাতে আর্থিক সুযোগ অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে। ব্লুমবার্গে মঙ্গলবার রেটিং এজেন্সি মুডিস প্রকাশিত এক রিপোর্টে একথা বলা হয়েছে।

আইএমএফ প্যাকেজ ছাড়া দেউলিয়া হতে পারে পাকিস্তান

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ)-এর বেইলআউট প্যাকেজ ছাড়া দেউলিয়া হতে পারে পাকিস্তান। কারণ, জুনের পরে দেশটির হাতে আর্থিক সুযোগ অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে। ব্লুমবার্গে মঙ্গলবার রেটিং এজেন্সি মুডিস প্রকাশিত এক রিপোর্টে একথা বলা হয়েছে। খবরটি এমন এক সময়ে প্রকাশ পেলো, যখন চরম নাটকীয়তায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর ফলে রাজধানী ইসলামাবাদে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। দেশজুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ বিক্ষোভ। এমনিতেই রাজনীতিতে অস্থির দেশটি। তার ওপর এই গ্রেপ্তারে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। তাতে অর্থনীতির ওপর আরও বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ অবস্থায় সিঙ্গাপুর ভিত্তিক রেটিং কোম্পানি মুডিসের একজন বিশ্লেষক গ্রেস লিম বলেছেন, জুনে সমাপ্ত হচ্ছে এই অর্থবছর। 

আমরা মনে করি এই অর্থ বছরের বাকিটা সময় আন্তর্জাতিক ঋণের কিস্তি শোধ করতে সক্ষম হবে পাকিস্তান। কিন্তু জুনের পর তাদের হাতে আর্থিক অপশন বা সুযোগ মারাত্মকভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এক্ষেত্রে আইএমএফের প্রোগ্রাম ছাড়া অত্যন্ত দুর্বল রিজার্ভ নিয়ে দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে পাকিস্তান। 

অনলাইন ডন বলছে, ২০১৯ সালে আইএমএফের কাছ থেকে ৬৫০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচিতে প্রবেশ করে পাকিস্তান। কিন্তু এর অংশ হিসেবে ১২০ কোটি ডলার ছাড় দেয়ার বিষয়টিতে নবম রিভিউ গত অক্টোবর থেকে মুলতবি রয়েছে। এর কারণ, আইএমএফের কিছু পূর্বশর্ত পূরণে সক্ষম নয় সরকার। পাকিস্তানের জন্য আইএমএফের অর্থ সহায়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা পেলেই অন্য বন্ধুপ্রতীম দেশগুলো থেকে অর্থায়নের পথ উন্মুক্ত হবে। তাতে দেউলিয়াত্ব থেকে পাকিস্তানকে বেরিয়ে আসতে সহায়ক হবে। 

গত বছর দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ একেবারে সংকটজনক অবস্থায় চলে যায়। এ সময় আইএমএফের অর্থ ছাড়ের বিষয়টি স্থগিত হয়ে যায়। গত বছরের অক্টোবর থেকে দেশটির অর্থনীতি টালমাটাল অবস্থায় আছে। কর্মসূচি পুনরুজ্জীবিত করতে সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য এ বছর ফেব্রুয়ারিতে একটি প্রতিনিধি দলকে আইএমএফ পাঠায় পাকিস্তানে। তারা চলে যাওয়ার পর অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, দাতা এই সংস্থার সঙ্গে আলোচনা প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। স্টাফ পর্যায়ের চুক্তি হতে পারে পরের সপ্তাহে। কিন্তু তার পরে কমপক্ষে দু’মাস পরেও সেই চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি। 

২৮শে এপ্রিল সমাপ্ত সপ্তাহে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৪৬ কোটি ডলার। এই অর্থে এক মাসের আমদানি খরচ মেটানো সম্ভব। ওদিকে মুদ্রাস্ফীতি অপ্রত্যাশিত পর্যায়ে পৌঁছেছে। ভোক্তা মূল্য সূচক এপ্রিলে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে শতকরা ৩৬.৪ ভাগে।