‘অসদুপায়ে’ শিক্ষা কর্মকর্তার মেয়ে উত্তীর্ণ: ইউনিয়ন সচিব পদ স্থগিত

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি জানান, আদ্রিতা রহমানের সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন ওঠায় একই প্রশ্নে পুনরায় তার পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেখানে তিনি কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম হননি।

‘অসদুপায়ে’ শিক্ষা কর্মকর্তার মেয়ে উত্তীর্ণ: ইউনিয়ন সচিব পদ স্থগিত
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানমের মেয়ে আদ্রিতা রহমান

প্রথম নিউজ, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে ইউনিয়ন পরিষদ সচিব পদে লিখিত পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে উত্তীর্ণ হওয়া আদ্রিতা রহমানের পদায়ন স্থগিত করেছে জেলা প্রশাসন। মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত তার পদ স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি।

আদ্রিতা রহমান টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানমের মেয়ে। ইউনিয়ন পরিষদ সচিব ও হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ১৬ জুলাই লিখিত এবং ১৭ জুলাই ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। সেখানে ১২ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হন। আদ্রিতা রহমান সর্বোচ্চ ৬৯ নম্বর পেয়ে প্রথম হন। তিনি লিখিত পরীক্ষায় ৬০, ব্যবহারিকে শূন্য এবং মৌখিক পরীক্ষায় ৯ নম্বর পান।

এ ঘটনায় বিবেকানন্দ স্কুল অ্যান্ড কলেজের কেন্দ্র সচিব, সহকারী কেন্দ্র সচিব ও প্রার্থীর কক্ষের ইনভিজিলেটরের উপর প্রভাব বিস্তার করে শিক্ষা কর্মকর্তা তার মেয়েকে সর্বোচ্চ নম্বর পেতে সহায়তা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে টাঙ্গাইল শহরে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রী পরিষদ সচিবের কাছে চিঠি দেন।

সচিব পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক আবু দাউদ বলেন, কে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন আমি জানি না। আমার জানার কথাও না। সার্বক্ষণিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে ছিলেন। সহায়তা করার প্রশ্নই ওঠে না। বিবেকানন্দ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে সহায়তার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, পরীক্ষার সময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রানুয়ারা খাতুন ও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক উপস্থিত ছিলেন। তাদের নির্দেশ মতো পরীক্ষা হয়েছে। সেখানে আমার সহায়তা করার সুযোগ কোথায়?

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি জানান, আদ্রিতা রহমানের সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন ওঠায় একই প্রশ্নে পুনরায় তার পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেখানে তিনি কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম হননি। এতে তার সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্তিতে সন্দেহ হওয়ায় পরীক্ষা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত তার পদ স্থগিত থাকবে।

১৬ ও ১৭ জুলাই প্রকাশিত ফলাফলে টাঙ্গাইলে ইউনিয়ন পরিষদ সচিব পদে লিখিত পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পান শিক্ষা কর্মকর্তার মেয়ে আদ্রিতা রহমান। পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ ও শিক্ষা কর্মকর্তার মেয়ের ওই নম্বর প্রাপ্তি নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বিস্ময় প্রকাশ করেন। স্থানীয় জনগণের সন্দেহের প্রেক্ষিতে ও অধিকতর যাচাইয়ের স্বার্থে একই প্রশ্নে পুনরায় আদ্রিতার পরীক্ষা নেয় জেলা প্রশাসন। তবে ওই পরীক্ষায় উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।

জানা যায়, গত ১৬ ও ১৭ জুলাই ইউনিয়ন পরিষদ সচিব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। একাধিক কেন্দ্রে নেওয়া হয় ওই পরীক্ষা। এর মধ্যে টাঙ্গাইল বিবেকানন্দ স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মেয়ে আদ্রিতা রহমান। ইউনিয়ন পরিষদ সচিব পদে লিখিত পরীক্ষায় ‘অসদুপায় অবলম্বনের’ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ২৭ জুলাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে লিখিতভাবে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগকে অবহিত করা হয়।

বিষয়টির প্রকৃত অবস্থা উদঘাটন এবং ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পুলিশের বিশেষ ইউনিট সিআইডির সহায়তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড.মো. আতাউল গনি।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom