স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত

সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেন এ চার্জশিট গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে মামলাটি বিচারের জন্য আবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এ বদলি করেন।

স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত

প্রথম নিউজ, অনলাইন: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে দেওয়া চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত। সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেন এ চার্জশিট গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে মামলাটি বিচারের জন্য আবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এ বদলি করেন।

এর আগে এ মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমামের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে ছিল। মামলার আদেশে চার্জশিট গৃহীত না লিখা থাকায় আসামিপক্ষ চার্জশিট গৃহীতের জন্য আবেদন করেন। এরপর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম মামলাটি মহানগর আদালতে বদলির আদেশ দেন। গতকাল সোমবার মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেন।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, ক্লাসিক্যাল মিসটেকের কারণে চার্জশিট গৃহীত আদেশে লিখা হয়নি। আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলাটির চার্জশিট গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে মামলাটি বিচারের জন্য পূর্বের আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে মামলার বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

মামলার অভিযোগপত্রে উল্লিখিত অন্য আসামিরা হলেন- রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক আমিনুল হাসান, উপ-পরিচালক (হাসপাতাল-১) ডা. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল-১) ডা. শফিউর রহমান এবং গবেষণা কর্মকর্তা ডা. দিদারুল ইসলাম।

হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকার পরও করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসার জন্য চুক্তি করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী এ মামলা করেন।

২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

এরপর ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালত অভিযোগপত্র আমলে নেন। মামলায় স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি আবুল কালাম আজাদকে আসামি করা না হলেও পরে তদন্তে নাম আসায় অভিযোগপত্রে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১২ জুন আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আলোচিত এ মামলার বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন।

মামলা বিবরণ থেকে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে লাইসেন্স নবায়ন না করা রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে পরিবর্তন, সমঝোতা স্মারক সই ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে ৩ হাজার ৯৩৯ জন কোভিড রোগীর নমুনা বিনামূল্যে পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করেন। ওই হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষার জন্য রোগীপ্রতি ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে মোট এক কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা নেওয়া হয়েছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখার চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয় ও অন্য কর্মকর্তাদের মাসিক খাবার খরচ হিসেবে এক কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার টাকার চাহিদা তুলে ধরাসহ এর খসড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।