স্বামী প্রমাণ করতে আশ্রয় নেন নানা প্রতারণা ও তঞ্চকতার
বিউটি খাতুন নিরুপায় হয়ে বিয়ের তিন বছর পর তলবি দেনমোহর দাবি করে ঝিনাইদহের একটি আদালতে মামলা করেন
প্রথম নিউজ, ঝিনাইদহ: বিউটি খাতুন নিরুপায় হয়ে বিয়ের তিন বছর পর তলবি দেনমোহর দাবি করে ঝিনাইদহের একটি আদালতে মামলা করেন। মামলার পর নিজে আসল স্বামী নয়, প্রমাণ করতে আশ্রয় নেন নানা প্রতারণা ও তঞ্চকতার। কাবিনসহ বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন স্বাক্ষর করে প্রতারণার মহাজাল বিস্তার করেন রছুল আমিন ওরফে রাছুল আমিন। এ নিয়ে তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে কাবিন জালিয়াতি করার অভিযোগে মামলাও করেন। ১৪ বছর মামলা চলার পর রছুল আমিন ওরফে রাছুল আমিন বিজ্ঞ আদালতের পর্যবেক্ষণে দোষী প্রমাণিত হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিজ্ঞ বিচারক বাদীর পক্ষে রায় ঘোষণা করেন। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রাঢ়িপাড়া গ্রামে। এই দম্পতি তিন বছর গাঁটছড়াভাবে সংসারও করেন।
এদিকে পিতার বাড়িতে ফেলে রেখে বিউটি বেগমের কাছে ৮০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন রছুল আমিন ওরফে রাছুল আমিন। স্বামীর বাড়িতে যেতে চাইলেও যৌতুক দাবির কারণে আর যাওয়া হয়নি বিউটির। অবশেষে ২০০৭ সালের ৮ই এপ্রিল ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পারিবারিক আদালতে মামলা করেন বিউটি। বিজ্ঞ আদালত তার রায়ে উল্লেখ করেন, মামলা দায়েরের পর থেকে রছুল আমিন ওরফে রাছুল আমিন নিজেকে গোলাম রছুল হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করেন। বাদী বিউটি বেগমের দাবি মিথ্যা প্রমাণের জন্য বিবাদী যত রকমের আইনগত বিধান আছে তার সুযোগ নিয়ে মামলাটি নিষ্পত্তিতে বাধা প্রদান করেন। বিয়ের ইমাম, কাজী (নিকাহ্ রেজিস্ট্রার) ও বাদীর ভাই বিউটি বেগমের পক্ষে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সার্বিক আলোচনা থেকে বিজ্ঞ আদালত এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, বাদী ও বিবাদীর মধ্যে বৈধভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। তারা ঘরসংসার করেছেন এবং এখনো তাদের মধ্যে বৈবাহিক অবস্থা বহাল আছে। ফলে বাদী তার দেনমোহর বাবদ বিবাদীর বিরুদ্ধে এক লাখ এক টাকার ডিক্রি প্রাপ্তির অধিকারী। রায় ঘোষণার ত্রিশ দিনের মধ্যে ডিক্রিকৃত সমুদয় অর্থ বাদীকে পরিশোধ করার নির্দেশ দেন আদালত। তাছাড়া বাদীর ভবিষ্যৎ ভরণপোষণের অধিকার খর্ব হওয়া না পর্যন্ত প্রতি ইংরেজি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে পূর্ববর্তী মাসের ভরণপোষণ বাবদ দুই হাজার টাকা প্রদানের জন্য বিবাদীকে নির্দেশ দেন। ব্যর্থতায় বাদী আইন দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ওই অর্থ আদায় করে নিতে পারবেন বলে পারিবারিক আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. ফরিদুজ্জামান রায়ে উল্লেখ করেন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: