স্বাধীনতা দিবসে বিএনপির বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় মানুষের ঢল

সরকার পালাবার পথও খুঁজে পাবেন না, আমরা সেই লক্ষ্যে সামনের দিকে এগিয়ে যাই: মির্জা ফখরুল

স্বাধীনতা দিবসে বিএনপির বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় মানুষের ঢল
স্বাধীনতা দিবসে বিএনপির বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় মানুষের ঢল

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সরকারের প্রতি হুঁষিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তোমার দিন শেষ। দয়া করে এখন ছেড়ে দিয়ে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। আজ শনিবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য স্বাধীনতা র‌্যালি পূর্বে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন।

নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শোভাযাত্রার আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের জন্য ট্রাক দিয়ে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরী করা হয়েছে। এই মঞ্চেই ব্যানার টানানো হয়। অস্থায়ী মঞ্চে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে র্যালির শুভ উদ্ধোধন ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল।

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, এখনো সময় আছে- আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারকে বলতে চাই, পদত্যাগ করুন এবং একটা নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনারের পরিচালনায় নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। অন্যথায় আপনারা পালাবার পথও খুঁজে পাবেন না। সেই লক্ষ্যে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাই। 

মির্জা ফখরুল বলেন, এই স্বাধীনতার র‌্যালির মধ্যে দিয়ে আমরা হাসিনা ও এই অবৈধ সরকারের কানে যে কথা ও বাণী পৌঁছে দিতে চাই- তোমার দিন শেষ। দয়া করে এখন ছেড়ে দিয়ে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন এবং জনগণের প্রতিনিধিত্বদের দিয়ে দেশ পরিচালনায় ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় সকল স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদীর যে পরিণতি হয়েছে, আপনাদেরও সেই একই পরিণতি হবে। 

আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে আমরা স্মরণ করতে চাই, সেসব লাখো শহীদদেরকে- আমরা অত্যন্ত শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করতে চাই আমাদের সেই নেত্রীকে। যিনি সেই ১৯৭১ সালে ওই চট্রগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের যারা সৈনিক ছিলেন তাদেরকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। আর দীর্ঘ ৯ মাস কারাগারে থেকে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাদের কাছে চিহ্নিত হয়েছেন। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে সারাদেশের মানুষ এই ৫০ বছর পরে আক্ষেপ করছে যে, আমরা কি পেয়েছি? আজকে আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা, নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবার স্বাধীনতা নেই। আজকে অর্থনীতি ধ্বংসের পথে চলে গেছে। আর গণতন্ত্রের কোন অধিকার নেই।  নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গুম নেতাদের তথ্য তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আসাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আজকে সকল অন্যায়কে পরাজিত করতে হলে, গণতন্ত্রকে ফিরে পেতে হলে, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং সমস্ত জাতি ও রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করে এই ভয়াবহ দানবীয় ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। 

বক্তব্য শেষে বিকেল পৌনে ৪টায় রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে থেকে পুরানা পল্টন হয়েেহয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। বিএনপির স্বাধীনতা র‌্যালির ব্যানারে লেখা হয়েছে, শহীদ জিয়ার ঘোষণা মুক্তিযুদ্ধের সূচনা, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে স্বাধীনতা র‌্যালি। 

দুপুর ১২টা থেকেই ব্যানার, ফেস্টুন, জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকা, ঘোড়ার গাড়ি, ট্রাক ও ঢোলসহ বিভিন্ন রকমের বাদ্যযন্ত্র নিয়ে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের হাজার হাজার নেতা কর্মীদেরকে শোভাযাত্রাস্থলে উপস্থিত হতে দেখা গেছে। এসময় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সরকার বিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তুলেন তারা। র‌্যালির বেশিভাগ ব্যানারে বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোর দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান লেখা দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শোভাযাত্রা ঘিরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে কঠোর অবস্থানে ছিলেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা। কার্যালয়ের আশপাশে সাদা পোশাকেও দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।    এছাড়া নয়াপল্টন, পুরানা পল্টন ও জাতীয় প্রেসক্লাবের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ ও ডিবি পুলিশও মোতায়েন করা হয়।

র‌্যালি পূর্ব সংক্ষপ্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান এবং আবদুস সালাম। এছাড়া শোভাযাত্রায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ- দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, জাতীযতাবাদী যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালহ উদ্দিন টুকুসহদলটির অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের হাজার হাজার নেতা কর্মী ছিলেন।   

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom