সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
প্রথম নিউজ, অনলাইন: সাবেক প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও ভাষা সংগ্রামী মিজানুর রহমান চৌধুরীর ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (রোববার)। ২০০৬ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন প্রথিতযশা এই পার্লামেন্টারিয়ান। মিজানুর রহমান মারা যাওয়ার তিনবছর বাদে একইদিনে তার বড় ছেলে আব্দুল্লাহ মিজানেরও মৃত্যু হয়।
এ উপলক্ষে রোববার রাজধানী ও চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারের বাড়িতে কোরআন তেলাওয়াত এবং বাদ আসর দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মেজ ছেলে আমানুল্লাহ মিজান রাজু চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ১৯২৮ সালের ১৯ অক্টোবর চাঁদপুরের পুরান বাজারস্থ পূর্ব শ্রীরামদী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম মো. হাফিজ চৌধুরী এবং মাতা মরহুমা মোসাম্মৎ মাহমুদা বেগম।
কলেজ থেকেই মিজানুর রহমান ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬২ সালে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬২ থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দায়িত্বও পালন করেছেন।
আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় তিনি সম্মিলিত বিরোধী দলের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। ১৯৭০-এর নির্বাচনে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩-এর সংসদেও তিনি সংসদ সদস্য ছিলেন। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রিসভায় তিনি তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলে আবদুল মালেক উকিল এবং মিজানুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের দুটি পৃথক ধারার সৃষ্টি হয়। ৮০ দশকের শুরুর দিকে মিজানুর রহমান এরশাদ সরকারকে সমর্থন দেন এবং ১৯৮৪ সালে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।
এরশাদের শাসনামলের ১৯৮৬ সালের ৯ জুলাই থেকে ১৯৮৮ সালের ২৭ মার্চ পর্যন্ত মিজানুর রহমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮ সালের মার্চ মাসের শেষের দিকে মওদুদ আহমেদ তার স্থলে প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৯০ সালে এরশাদ ক্ষমতা ছেড়ে দিলে তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
এরশাদ জেলে থাকাকালীন মিজানুর রহমান চৌধুরী জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে মিজানুর রহমান পুনরায় আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন। ২০০৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।