শিক্ষক সংকটে সুনামগঞ্জের ৫টি উচ্চ বিদ্যালয়

শিক্ষক সংকটে সুনামগঞ্জের ৫টি উচ্চ বিদ্যালয়

প্রথম নিউজ, ডেস্ক :  সুনামগঞ্জ জেলার ৫টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
শিক্ষক সংকটে থাকা বিদালয় ৫টি হলো সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি এসসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তাহিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, জগন্নাথপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও জগন্নাথপুর স্বরূপ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়। জেলায় নতুন সরকারি হওয়া উচ্চ বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে ছাতক বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও জামালগঞ্জ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়। এরমধ্যে সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ বহুদিন ধরেই শূন্য। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফয়জুর রহমান বললেন, করোনাকালের ক্ষতি পুষাতে সামনের দিনগুলোয় অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া জরুরি। কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব। ৩য় থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত দুই শিফটে ক্লাস হয় ২৬টি।
কোনো কোনো সময় ক্লাস আরও বাড়ে। ৫২ জন শিক্ষকের পদ থাকলেও আছেন ৩০ জন। অফিশিয়াল কাজ বা সরকারি কাজে আমার অনুপস্থিতি, ছুটি-অসুস্থতা মিলিয়ে অনেক সময় ২৬ জন শিক্ষকই থাকেন না। এই অবস্থায় রুটিন অনুযায়ী পাঠদান করাই মুশকিল, অতিরিক্ত ক্লাস কীভাবে হবে। শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে, এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক না দিলে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ধরে রাখা কঠিন হবে।
এদিকে সরকারি এসসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই শিফটে ছাত্রসংখ্যা ১২০০ জন। এই বিদ্যালয়েও ৫২ জনের মধ্যে শিক্ষক আছেন ৩০ জন। স্বাভাবিক অবস্থায় শিক্ষক সংকটের কারণে পাঠদান ব্যাহত হবে বলে মন্তব্য করলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজ মো. মাসহুদ চৌধুরী।
তাহিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্রসংখ্যা ৭৪৩ জন। শিক্ষকের পদ আছে ১১ জনের।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন ৫ জন। প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ ৬ পদ শূন্য। এর মধ্যে ইসলাম শিক্ষার শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম ডেপুটেশনে আছেন সিলেটের সরকারি আলিয়া মাদ্রাসায়। জগন্নাথপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫০ জন। এই বিদ্যালয়ে মানসম্মত পাঠদান নিশ্চিত করতে হলে ২২ বা ২৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া জরুরি। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক আছেন ৩ জন।
জগন্নাথপুর স্বরূপ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫০ জন। শিক্ষকের পদ আছে ১১টি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাহেদ আলী বললেন, ৬-৭ বছর হয় ৩-৪ জনের বেশি শিক্ষক কখনোই ছিলেন না। এখন আছি ৩ জন। আমি সরকারি কাজে সু্কল ছাড়লে শিক্ষক থাকবেন ২ জন। বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পাঠদান শুরু হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক সংকটের কারণে স্বাভাবিক ক্লাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
মাধ্যমিক-উচ্চ শিক্ষার সিলেট বিভাগের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর কবির আহমদ বললেন, সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের গ্রেড উন্নীত হওয়ায়, নিয়োগ দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল, পিএসসি থেকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার সব কিছুই শেষ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সিলেট বিভাগের সকল শূন্য পদের তালিকাও আমরা দিয়েছি। বিভাগে ৩০ ভাগ শিক্ষকের পদ শূন্য। শিক্ষক নিয়োগ দ্রুতই হবে, সংকটও দূর হবে আশা করছি।