রাষ্ট্রীয় পদক, জাতীয় পুরস্কার প্রদানে রাজনৈতিক পরিচয় দেখা উচিত নয়: সেলিনা হোসেন
প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, রবীন্দ্রনাথের নানা কাব্য ও সংগীত বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। তার লেখনিতে ছিল মানবতার জয়গান। তিনি মানুষকে নিয়ে আরাধনা করতেন। ধর্ম নিয়ে কখনোই তিনি বাড়াবাড়ি করতেন না। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন শান্তির পক্ষে এক অতুলনীয় শক্তি। বর্তমান সময়ে মানুষে মানুষে যে হানাহানি, রাজনীতির যে প্রতিহিংসা তিনি ছিলেন তার বিপক্ষে। পাঞ্জাবের জালিয়ান ওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ব্রিটিশ সরকারের 'নাইটহুড' উপাধি প্রত্যাখ্যান করেন রবীন্দ্রনাথ। অথচ এখন আমরা দেখি পদ, পদবী, পুরস্কারের জন্য মানুষ তার ব্যক্তিসত্তাকে বিসর্জন দিচ্ছে। ন্যায়নীতিকে তোয়াক্কা করছে না। রাজনৈতিক লেজুরবৃত্তির মাধ্যমে অযোগ্য ব্যক্তিরা নানা জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পাচ্ছে। দেশের সত্যিকারের গুণী ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেয়ার ক্ষেত্রে কেবল জ্ঞান ও যোগ্যতাকের প্রাধান্য দেয়া উচিত। তিনি আরো বলেন, রবীন্দ্রনাথ তার উপন্যাসগুলোর মধ্যে বিভিন্ন চরিত্রের যে চিত্রায়ন করেছেন, তা পড়ে অনুভব করলে মনে হবে প্রত্যেকটি চরিত্রই স্ব-স্ব মহিমায় শ্রেষ্ঠ। শেষের কবিতায় অমিত-লাবন্য, নৌকাডুবিতে রমেশ-হেমনলিনী, চোখের বালি উপন্যাসে মহেন্দ্র-বিনোদনী সহ প্রত্যেকটি উপন্যাসের চরিত্রগুলো খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। রবীন্দ্রনাথকে বুঝতে হলে তার সৃষ্টিকে বুঝতে হবে। রবীন্দ্রনাথ তার সৃষ্টির মাধ্যমেই অনন্তকাল বেঁচে থাকবেন।
“রবীন্দ্রনাথ গদ্য ও কবিতার চেয়ে সংগীতে বেশি জনপ্রিয়” শীর্ষক উক্ত ছায়া সংসদে ইডেন মহিলা কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, প্রানের বাংলা সম্পাদক আবিদা নাসরিন কলি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী, কবি জাহানারা পারভিন এবং সঙ্গীত পরিচালক তানভীর তারেক । প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।