রাফায় ইসরায়েলের হামলা সীমা লঙ্ঘন করেনি, বলছে যুক্তরাষ্ট্র
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এর মধ্যে গত রোববার রাফায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
তবে রাফায় ইসরায়েলের হামলা সীমা লঙ্ঘন করেনি বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউস থেকে এমন তথ্যই জানানো হয়েছে। বুধবার (২৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রাতবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রাফা শহরে পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসন চালিয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে না বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি। ইসরায়েলি বাহিনী শহরটি কেন্দ্রে পৌঁছানো এবং মিসর সীমান্তে নজরদারির জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি পাহাড় দখলের খবর আসার কয়েক ঘণ্টা পর তিনি এ মন্তব্য করলেন।
বিজ্ঞাপযদিও চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, যদি ইসরায়েল রাফার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রবেশ করে যেখানে লাখের বেশি বেসামরিক নাগরিক এখনও আশ্রিত আছে বলে মনে করা হচ্ছে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিকে অস্ত্র সরবরাহ করা সীমিত করে দেবে।
কিরবি একই সাথে ইসরায়েলের বিমান হামলা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। ওই হামলায় গত রোববার বাস্তুচ্যুতদের একটি তাঁবুর শিবিরে আগুন ধরে গেলে অন্তত ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়, যাদের মধ্যে অনেক নারী, শিশু ও বৃ্দ্ধও ছিলেন।
ইসরায়েল বলছে, তাদের বিশ্বাস হামাসের মজুদ করে রাখা অস্ত্র বিস্ফোরণের কারণেই ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তারা হামাসকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে এবং তাদের দুজন শীর্ষ নেতাকে হত্যা করেছে।
জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, রোববারের অভিযানের যেসব ছবি পাওয়া গেছে, যেখানে বেশিরভাগই নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ মারা গেছে- তা ছিল ‘হৃদয়বিদারক’ ও ‘ভয়ঙ্কর’। তিনি বলেন, ‘সংঘাতের কারণে কোনো নিরীহ মানুষের জীবনহানি হওয়া উচিত নয়।’
তিনি স্বীকার করেন, ইসরায়েল এই ঘটনার তদন্ত করছে এবং একই সাথে বলেছেন, রাফার সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপটে তার আগের বক্তব্য পরিবর্তনের কোনো নীতি তার নেই।
কিরবি বলেন, ‘একটি বড় ধরনের স্থল অভিযান হয়েছে এমনটি আমরা এখনো বিশ্বাস করি না....এবং এ পর্যায়ে আমরা সেটি দেখিনি। আমরা রাফা শহরে তাদের তেমন ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে দেখিনি। সেখানে তেমন অভিযান হলে ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে বলে প্রেসিডেস্ট আগেই জানিয়েছেন।’
তার ভাষায়, ‘আমরা তাদের বড় ইউনিট, বিপুল সংখ্যক সৈন্য নিয়ে অনেকগুলো লক্ষ্যবস্তুকে টার্গেট করে তেমন সমন্বিত কিছু করতে দেখিনি’।
এদিকে ইসরায়েলি পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু রোববারের অভিযানকে ‘দুঃখজনক দুর্ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করলেও অভিযান অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
মঙ্গলবার দেশটির সেনাবাহিনী আইডিএফ জানিয়েছে, রাফা শহরে ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুর’ বিরুদ্ধে তাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে চিহ্নিত আল আওদার কাছে ট্যাংক মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানকার অধিবাসীরা জানিয়েছেন, শহরের পশ্চিমাঞ্চলে সোমবার মধ্যরাতে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ইসরায়েলের সেনাবাহিনী আল মাওয়াসিতে গোলাবর্ষণের অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেছে। এটিও একটি তাঁবুর ক্যাম্প। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, সেখানে ২১ জন নিহত হয়েছে।