যুব বিশ্বকাপ সামনে রেখে বিসিবির মহাপরিকল্পনা
২০২২ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপের মতো ২০২৪ সালে যেন ভরাডুবি না হয় সেজন্য আটঘাট বেঁধে নেমেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ইতোমধ্যে দল বাছাই শেষে ক্যাম্প শুরু হয়েছে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: ২০২০ সালে ভারতকে হারিয়েই প্রথমবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে মাতে বাংলাদেশ। পরের আসরে খেলতে গিয়ে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে যদিও। তবে ২০২২ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপের মতো ২০২৪ সালে যেন ভরাডুবি না হয় সেজন্য আটঘাট বেঁধে নেমেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ইতোমধ্যে দল বাছাই শেষে ক্যাম্প শুরু হয়েছে। নিয়ে আসা হয়েছে হাই প্রোফাইল কোচও। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অস্ট্রেলিয়ান কোচ স্টুয়ার্ট ল। এছাড়া ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটার ওয়াসিম জাফরকে।
অবশ্য আগামী যুব বিশ্বকাপ আসতে এখনো দেড় বছরের বেশি সময় বাকি। তাই এই সময়টাকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম বছর এক ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে এগুবে বিসিবি। পরের ৬ মাসে থাকবে ভিন্ন পরিকল্পনা। প্রথম বছর প্রতিটা সিরিজের সঙ্গে চারদিনের ম্যাচ থাকবে। পরবর্তী ছয় মাস শুধু ওয়ানডে ম্যাচ খেলবে যুবদল।
দেড় বছরের পরিকল্পনা নিয়ে গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির ম্যানেজার আবু ইনাম মোহাম্মদ কাউসার বলেছেন, ‘আমাদের হাতে দেড় বছর সময় আছে। প্রথম এক বছর আমরা লাল বল ও সাদা বল দুটোতেই মনযোগ দেবো। হোম ও অ্যাওয়ে যে সিরিজগুলো আছে, প্রতিটিতেই একটি করে চারদিনের ম্যাচ আছে। লঙ্গার ভার্সনের সঙ্গে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি। তো আমাদের প্রথম এক বছর জুন (২০২৩) পর্যন্ত আমাদের পরিকল্পনাকে দুইটা ভাগ করেছি। প্রথম এক বছর আমরা ওয়ানডে ও লঙ্গার ভার্সন দুটোতেই মনোযোগ দেবো। জুন পর্যন্ত অন্তত তিনটা সিরিজ হবে। এটা খুব সম্ভবত পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বিভিন্ন জায়গায় হবে। জুনের পরে ৬ মাস হাতে থাকবে বিশ্বকাপের জন্য। তখন আমরা বেশি ফোকাস করবো ওয়ানডেতে- এটাই হচ্ছে আমাদের পরিকল্পনা।’
৪০ ক্রিকেটার নিয়ে ল ও জাফর রবিবার থেকে মিরপুরে ক্যাম্প শুরু করেছেন। আগামী দেড় বছর নিয়োগপ্রাপ্ত দুই কোচ নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে জুনিয়র এই ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য প্রস্তুত করবেন বলে জানিয়েছেন।
এদের মধ্যে স্টুয়ার্ট লয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বেশ পুরনো। এক যুগ আগে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ ছিলেন তিনি। মাঝে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে গেছেন ২০১৬ সালে। ৬ বছর পর একই দলের প্রধান কোচ হয়ে নতুন পথ চলা শুরু করলেন। পুরোনো ডেরায় ফিরে তাই রোমাঞ্চিত এই অস্ট্রেলিয়ান কোচ। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন, ‘ফিরে এসে ভালো লাগছে। আজ এখানে এসে কিছু পরিচিত, বন্ধুত্বপূর্ণ মুখ দেখতে পেলাম। অনেক ভালো স্মৃতি আছে এখানে। তাই ফিরতে পেরে ভালোই লাগছে। আমি ২০১৬ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সঙ্গে কাজ করেছি। যেখানে মিরাজ, শান্তরা ছিল। এখন ওদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে দেখে খুব ভালো লাগছে।’
২০২৪ সালের যুব বিশ্বকাপে চোখ রেখে যুবাদের তৈরি করবেন তিনি। রবিবার থেকে শুরু হয়েছে ক্যাম্প। ৪০ জনের এই ক্যাম্প থেকে দল বাছাই হবে। ল মূলত ক্রিকেটারদের ভালো মানুষ হিসেবেই গড়ে তুলতে চান, ‘আমি প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছি বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায়। সত্যি কথা বলতে আন্তর্জাতিক দলের প্রধান কোচ হিসেবে খুব বেশি কোচিংয়ের সুযোগ থাকে না। এটা মূলত অনেক কথা বলা, প্রশাসনিক কাজ করার দায়িত্ব। কিন্তু এই দায়িত্বটা (যুবাদের নিয়ে কাজ) আমাকে উঠতি ক্রিকেটার নিয়ে কাজ করার সুযোগ এনে দেবে। যেখানে আমি পার্থক্য এনে দিতে পারবো। শুধু ক্রিকেটীয় সামর্থ্যে নয়, তরুণ ব্যক্তিত্ব গড়ার ক্ষেত্রেও সাহায্য করতে পারবো। তাই সুযোগটা যখন এলো, আমার জন্য হ্যাঁ বলা খুব সহজ ছিল।’
ল আরও বলেছেন, ‘তরুণ ক্রিকেটারদের আজকাল মাঠের বাইরে অনেক কিছুই করতে হয় যেটা আমাদের সময়ে করতে হতো না। আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কথা বলছি। আমরা চেষ্টা করবো ছেলেদের এ ব্যাপারে শিক্ষা দিতে। মাইন্ড কোচ এনে হোক বা যেভাবেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভালো-খারাপ দিকটা ওদের বুঝাতে হবে। এই যুগের ক্রিকেটারদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অনেক বহিরাগত চাপ তৈরি করে থাকে।’
এদিকে ওয়াসিম জাফর নিজের পরিকল্পনা নিয়ে বলেছেন, ‘আমি যেটা বিশ্বাস করি, অনূর্ধ্ব-১৯ দল ভালো করলে জাতীয় দলও ভালো করবে। একটা প্রতিযোগিতা চলে আসে। তাই এই ছেলেদের নিয়ে আমাদের দায়িত্ব হলো তাদের সেরাটা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা এবং এখানে পারফর্ম করার পাশাপাশি পরবর্তী ধাপে খেলার জন্য তৈরি করা। আমাদের জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জ।’
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews