ভুল ধরা পার্টি’ কয়েকদিন পর সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থারও ভুল ধরবে: তথ্যমন্ত্রী

শুক্রবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের রেড ক্রিসেন্ট ফিজিও অর্থোপেডিক পুনর্বাসন সেবাকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ভুল ধরা পার্টি’ কয়েকদিন পর সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থারও ভুল ধরবে: তথ্যমন্ত্রী

প্রথম নিউজ, ঢাকা: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের প্রান্তিক মানুষের কথা ভেবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার মধ্যে চারটি প্রোগ্রাম আছে। তার মধ্যে একটি প্রোগ্রাম একেবারে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য। তিনি যত চাঁদা দেবেন, সরকার সমপরিমাণ চাঁদা সেখানে দিয়ে দেবে। তিনি যদি মাসে এক হাজার টাকা দেন, সরকার আরও এক হাজার টাকা দিয়ে দেবে। সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করার ক্ষেত্রে এবং রাষ্ট্রকে মানবিক করার ক্ষেত্রে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা একটি বিরাট উদ্যোগ।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুকে নাগরিক সমাজের সদস্য, যারা কারণে-অকারণে জাতিকে জ্ঞান দেন, তারাও অভিনন্দন জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন। হয়তো কদিন পরে দেখা যাবে, এখানের মধ্যে কি ভুল আছে সেটি বের করার চেষ্টা করা হবে। তারা কোনো কাজকর্মের না, অন্যজনে কি কাজ করে সেটির ভুল ধরেন। আমি এজন্য তাদের নাম দিয়েছি ‘ভুল ধরা পার্টি’। রাত ১২টার পর এ ‘ভুল ধরা পার্টি’ টেলিভিশনে সরব হয়।

শুক্রবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের রেড ক্রিসেন্ট ফিজিও অর্থোপেডিক পুনর্বাসন সেবাকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, মানবিক ও সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করার লক্ষ্যেই ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর শেখ হাসিনা বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা চালু করেছেন। এখন সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২২ প্রকার ভাতা দেওয়া হয়। প্রতি ইউনিয়ন পরিষদে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষ নানা প্রকারের ভাতা পায়। আজ মানুষের স্বপ্নকেও হার মানিয়ে শেখ হাসিনা ছিন্নমূল মানুষকে ঘর করে দিচ্ছেন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, যে কুষ্ঠ রোগীর পাশে আত্মীয়-স্বজনও যায় না, যে বেদে সম্প্রদায় নৌকায় বসবাস করে, যারা ঘর বাঁধে না, যে মানুষটি মানুষের ধারে ধারে ভিক্ষা করতেন, রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজতেন, তিনি কখনো পাকা দালানের স্বপ্ন দেখতেন না, তিনি স্বপ্ন দেখতেন আমার যদি একটি দোচালা ঘর হতো, তাদের স্বপ্নকেও হার মানিয়ে শেখ হাসিনা জমির মালিকানাসহ ইতোমধ্যে সাড়ে ৮ লাখ পাকা টিনশেড ঘর করে দিয়েছেন। 

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, বিশ্ব সম্প্রদায় থেকেও প্রশংসিত হচ্ছেন। শুধু প্রশংসা করতে পারে না আমাদের দেশের বিএনপিসহ কিছু দল আর কিছু ব্যক্তি বিশেষ। এটি জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। যে যাই বলুক না কেন, কাজ করলে সমালোচনা হবে। আমরা সমালোচনাকে সমাদৃত করার মানসিকতা পোষণ করি। সেই কারণে আমরা মনে করি সমালোচনা করলে ক্ষতি নেই। কিন্তু অন্ধের মতো সমালোচনা ভালো নয়, সবকিছুতে না বলার সংস্কৃতি এবং না বলার রাজনীতি রাষ্ট্রের জন্য ভালো নয়।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বাংলাদেশের মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে নতুন নতুন বিশ্বমানের হাসপাতাল হচ্ছে, সেখানে সেবার মূল্য এত বেশি যে- তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। আমাদের সরকার স্বাস্থ্য সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোর আধুনিকায়ন করেছে। হাসপাতালের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।

সিটি কর্পোরেশন ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত অর্থোপেডিক সেন্টার, যাতে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের একটি জনপ্রিয় আস্থার প্রতীক হয় সেই কামনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সেবার মানসিকতা নিয়েই কাজ করে। শুধু প্রতিষ্ঠান দাঁড় করালেই হবে না, সেবার মানটি রক্ষা করাসহ স্বল্পমূল্যের সেবা নিশ্চিত করতে হবে। আমি আশা করি, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রতি মানুষের আস্থা এবং ভালোবাসা আরও প্রসারিত হবে, আরও বিত্তবানরা এগিয়ে আসবেন। আর্তমানবতার সেবায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়াবেন।

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আব্দুল ওয়াহ্হাবের সভাপতিত্বে এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম সিটি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জব্বারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ট্রেজারার এম এ ছালামের ব্যক্তিগত অর্থায়নে প্রায় ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ফিজিও অর্থোপেডিক পুনর্বাসন সেবা কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়।