ভারত আমেরিকাকে কিছু বললে তার স্বার্থে বলেছে
গতকাল ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা উপ-কমিটির ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: আঞ্চলিক রাজনীতির বিষয়ে এই ভূখণ্ডে ভারত এবং আমেরিকার অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। তাই ভারত আমেরিকাকে কিছু বললে নিজেদের স্বার্থে বলেছে। এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ নয়। গতকাল ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা উপ-কমিটির ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি তাকিয়ে আছে আমেরিকার দিকে, কখন নিষেধাজ্ঞা, ভিসা নীতি দেবে তার আশায়। তাকাতে তাকাতে চোখের পাওয়ার কমে গেছে। এখন আর কিছু দেখতে পায় না। আর আওয়ামী লীগ তাকিয়ে আছে দেশের জনগণের দিকে। তিনি বলেন, উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে যে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে দেশের জনগণ ভোট দিলে আওয়ামী লীগ আবার রাষ্ট্র পরিচালনায় আসবে। আওয়ামী লীগের পালানোর ইতিহাস নেই দাবি করে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ২০ বছরের দণ্ডিত আসামি। তিনি কাপুরুষোচিত রাজনীতি করছেন, তাই তার নেতৃত্বে কোনো আন্দোলনে সফল হবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি’র হাতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিরাপদ নয়। বিএনপি ডেঙ্গুর চেয়ে ভয়ঙ্কর, তাই এই দলটি থেকে সাবধান থাকতে হবে। সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু কর্মসূচি পালন করে না। দেশের জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে আমাদেরকে এগিয়ে আসতে হয়। আমাদের বাঁচতে হলে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। শুধু রাজনীতি করলে হবে না।
মানুষকে বাঁচানোর রাজনীতি সবার আগে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ডেঙ্গু থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। ডেঙ্গুর মতো ভয়ঙ্কর বিএনপি থেকে সাবধান। আজকে দেশের প্রধান দুই শত্রু, এক শত্রু বিএনপি, আরেক শত্রু ডেঙ্গু। আসুন, আমরা সম্মিলিতভাবে এই শত্রুর প্রতিরোধ করি। মানুষের জীবন ডেঙ্গুর হাতে নিরাপদ নয়। বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদ বিএনপি’র হাতে নিরাপদ নয়। ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। ’৭৫-এ আমরা ক্ষমতা হারিয়েছি, তখন তো ভারত আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়নি। নির্বাচনের ব্যাপারে ভারত বা কোনো বিদেশি শক্তি কাউকে ক্ষমতায় বসাবে, ক্ষমতাচ্যুত করবে, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তাদের এমন মন্তব্য করা অশোভন। তিনি বলেন, যারা ভারতের হস্তক্ষেপ বলেন তাহলে একাত্তর সালে কি হয়েছিল? ভারত আমাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল, তাদের সৈন্যরা রক্ত দিয়েছে, আমাদের শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে, ট্রেনিং দিয়েছে, সেটা কি অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ নয়?
আওয়ামী লীগ নয়, বরং বিএনপিই ক্ষমতায় বসার জন্য বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে আছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ- এমন কোনো মন্তব্য ভারত থেকে পাইনি। আমাদের ক্ষমতায় বসাবে জনগণ, বরং বিএনপি তাকিয়ে আছে বিদেশিদের দিকে। এ সময়ে ওবায়দুল কাদের ডেঙ্গুবিরোধী এ কর্মসূচিকে দেশব্যাপী জোরদার করতে স্থানীয় প্রশাসন, কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা কর্মসূচি অনুষ্ঠানে ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। পরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়।