‘বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে যদি ভারত পদক্ষেপ নেয়, সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক’

শনিবার সকালে চন্দ্রিমা উদ্যানে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। 

‘বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে যদি ভারত পদক্ষেপ নেয়, সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক’

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যদি ভারত কোনো পদক্ষেপ নেয়, সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। এই অঞ্চলের মানুষের জন্য সেটা শুভ হবে না। আশা করবো, ভারত বাংলাদেশের মানুষের যে গণতান্ত্রিক আকাক্সক্ষা, সেই আকাক্সক্ষাকে মর্যাদা দেবে। এই দেশে সত্যিকার অর্থেই সকল দলের অংশগ্রহণে, সকলের সদিচ্ছায় একটি নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যাপারে তারা (ভারত) পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করবে। শনিবার সকালে চন্দ্রিমা উদ্যানে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। 

বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছে ভারত- বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হয়েছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরাও দেখলাম, ডয়চে ভেলের বরাত দিয়ে পত্রিকায় রিপোর্টটি করা হয়েছে। এটা যদি সত্যি হয়ে থাকে; এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমরা বাংলাদেশের মানুষের ওপর আস্থা রাখি, তাদের শক্তির ওপর আস্থা রাখি। আমি মনে করি, ভারত দেখবে বাংলাদেশের মানুষ কী চায়?

সব দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে ভারত সমর্থন দেবে এমনটা আশা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে বাংলাদেশে যে সংকট, সেই সংকটের মূলে হচ্ছে এই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের মানুষের ওপরে যে অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে রাষ্ট্রকে দিয়ে, বলা যেতে পারে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস গড়ে তুলে ‘টোটালি একটা ডিপ স্টেট’ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশ যারা গণতন্ত্রের কথা বলে সব সময়, তাদের কাছে এটা অপ্রত্যাশিত; যদি এই নিউজ সত্যি হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, এই কথাটা আমরা কখনই বলতাম না, বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, আমরা দেখতে পারছি যদি নিউজটা সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে বাংলাদেশে রাজনীতির অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে তারা (ভারত) হস্তক্ষেপ করছে।

দেশে মৌলবাদীদের ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভবনা নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশে কোনো মৌলবাদী দলের ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা নাই। বাংলাদেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে দেখা গেছে, কখনই কোনো মৌলবাদী দল তারা ক্ষমতায় আসতে পারেনি। বরঞ্চ তাদের যে শক্তি সেই শক্তি ক্ষীয়মান হয়ে এসেছে।

ফখরুল বলেন, এই সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করেছে। এখন বাংলাদেশের মানুষকে জিম্মি করে তারা একটা রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এ দেশের জনগণ আজকে এক হয়েছে, সব দল এক হয়েছে তাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য। এই একদফার লড়াইয়ে নিশ্চয় জনগণ জয়ী হবে।

এর আগে সকালে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দলটির নেতাকর্মীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, সংগঠনটির নেতা ইয়াসিন আলী, নাজমুল হাসান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিনসহ শতাধিক নেতাকর্মী।