ভেজাল বীজে কপাল পুড়ল শতাধিক কৃষকের

ভেজাল বীজে কপাল পুড়ল শতাধিক কৃষকের

প্রথম নিউজ , নাটোর : নাটোরের নলডাঙ্গায় ভেজাল আমন ধানের বীজ রোপণ করে শতাধিক কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বীজ রোপণের পর নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ধানের শীষ গজানোর ফলে ধানে চিটা ধরাসহ ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।

কৃষকদের দাবি, নলডাঙ্গা বাজারের একটি দোকান থেকে বীজ কিনে এ প্রতারণার শিকার হয়েছেন তারা। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা।

কৃষক সূত্রে জানা গেছে, নলডাঙ্গা উপজেলার বেলঘরিয়া, নশরৎপুর, সাহেব ভিটা গ্রামের প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে প্রিমিয়াম সিড স্বর্ণা-৫, ব্রি-২৯, দিনাজপুর সীড-ব্রি-২৯ ও সম্পারানী কোম্পানির বীজ বপন করে প্রতারিত হয়েছে শতাধিক কৃষক। এসব এলাকার মাঠের রোপণ করা ধান‌ গাছে সময়ের আগেই ধানের শিস গজিয়েছে। এর ফলে আগেই পরিপক্ব হওয়ায় চিটে হয়ে মরে যাচ্ছে।

বলঘরিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের কৃষক হায়দার আলী জানান, আমার ৫ বিঘা জমিতে সেলিম বীজ ভান্ডার থেকে প্রিমিয়াম সিড ব্রি-২৯ জাতের ধানের চারা রোপণ করে প্রতারণার শিকার হয়েছি। ধানের শিস বের হওয়ার পর দেখা যায় অধিকাংশ ধানের শিস চিটা হয়ে মরে যাচ্ছে। এতে আমরা ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছি।

ওই এলাকার কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, আমার এই জমির ধান দিয়ে পরিবারের তিন বেলা খাবার জোটে। এবার ভেজাল বীজ লাগানোর ফলে ধানে চিটা হয়েছে। এখন চিন্তা করছি পরিবার নিয়ে খাব কি?

সেচ খরচ, কীটনাশক খরচে, জমিতে নিয়োগ করা শ্রমিক খরচ বাবদ এই এলাকায় প্রতি বিঘা ধানখেতে খরচ হয়েছে ১০-১২ হাজার টাকা। এতো টাকা খরচ করেও কাঙ্ক্ষিত ফলন না পাওয়ার দুশ্চিন্তায় ভুগছেন কৃষকরা। এর প্রতিকার চেয়ে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েও প্রতিকার না মেলায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেলিম বীজ ভান্ডারের মালিক আহাদ আলী জানান, দিনাজপুর থেকে আনা বোরো মৌসুমের প্রিমিয়াম সিড ব্রি-২৯ ও স্বর্ণা-৫ জাতের বীজ কৃষকদের কাছে বিক্রি করেছি। বীজগুলোর চারা গজিয়েছে ফলন না হলে আমাদের কিছু করার নাই।

নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)দেওয়ান আকরামুল হক বলেন, কৃষকরা বাজার থেকে আমন ধানের বীজ কিনে প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় উপজেলা কৃষি বিভাগকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নাটোরের উপ-পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ জানান, নলডাঙ্গা উপজেলার কিছু কৃষক এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি, সত্যতা পেলে বীজ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।