বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে মালয়েশিয়ার বিবৃতি

বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে মালয়েশিয়ার বিবৃতি

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : মালয়েশিয়ায় বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ, বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়েছেন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান। ১৯ জুন এই বিবৃতিটি দেন তিনি। বিবৃতিতে বলা হয়—১। এই প্রেস বিবৃতিটি বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ এবং বিশেষ করে বাংলাদেশ হতে কর্মী নিয়োগের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিবে।

২। আমি এই মর্মে পরিষ্কারভাবে জানাচ্ছি যে, বাংলাদেশ হতে কর্মী নিয়োগে ২৫টি কোম্পানি নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথিত সংশ্লিষ্টতা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমার দেখা করা প্রসঙ্গটি ছিল মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের বর্তমান অবস্থা ব্যাখ্যা করা, বিদেশি কর্মীদের বর্তমান অবস্থান এবং আমার মন্ত্রণালয়ের দ্বারা উন্নত কর্মপরিবেশের জন্য গৃহীত উদ্যোগগুলো বর্ণনা করা।

৩। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ১৫২০টি কোম্পানির তালিকা দেয়; যার মধ্য হতে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় ২৫টি কোম্পানিকে মনোনীত করে। এই প্রক্রিয়ার পূর্বে মাত্র ১০টি রিক্রুটমেন্ট কোম্পানি বাংলাদেশ হতে শ্রমিক নিয়োগে নিয়োজিত ছিল।

৪। সুতরাং বিদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থান ও কল্যানের স্বার্থে এজেন্সি সংখ্যা ১০টি হতে ২৫টিতে উন্নিত করা হবে। যাতে ২৫টি নির্ধারিত কোম্পানির মাধ্যমে একটি ভারসাম্যমূলক কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা যায়। তবে একচেটিয়া আধিপত্য ও সম্ভাব্য অপব্যবহার রোধ এবং কর্মীদের জন্য আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় হতে প্রাপ্ত তালিকা হতে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় আরও ২৫০টি কোম্পানিকে মনোনীত করে। এই ২৫০টি কোম্পানি ২৫টি কোম্পানির কাঠামোর মধ্যে কাজ করবে। সহজভাবে বলা যায়- ২৫টি কোম্পানির প্রত্যাকের তত্ত্বাবধানে আরও ১০টি করে সহযোগী কোম্পানি হিসেবে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত মান বজায় রেখে কাজ করবে।

৫। এখন প্রশ্ন হলো প্রাথমিক ২৫টি এবং সহযোগী ২৫০টি কোম্পানির মধ্যে পার্থক্য কী? প্রথমত, মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় ২৫টি মনোনীত কোম্পানির সাথে কাজ করবে। এই কোম্পানিসমূহকে মন্ত্রণালয় ঘনিষ্ঠভাবে তদারকি করবে; তারা যেন বিদেশি কর্মীদের কর্মপরিবেশ, জীবনযাত্রা ও কর্মক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO) কর্তৃক নির্ধারিত মান মেনে চলে। মালয়েশিয়া জবরদস্তিমূলক শ্রম বন্ধের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক কেননা এ বিষয়টি মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক অবস্থানকে দুর্বল করে দেয়। দ্বিতীয়ত, এই ২৫টি কোম্পানির দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো তাদের সহযোগী ২৫০ কোম্পানির মাধ্যমে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা।

৬। এই সুযোগে আমি সকল ভুল ধারণা দূর করার জন্য বলতে চাই যে, বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্মী সরবরাহকারী দেশসমূহের ওপর অবশ্যই মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাধিকার থাকবে। অন্য দিকে মন্ত্রণালয় আমাদের নিজ কোম্পানি গুলোর উৎপাদন চাহিদা মেটাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগের অনুমোদন প্রদান করবে। শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, ১৪টি কর্মী সরবরাহকারী উৎস দেশের যে কোনটি হতে কোম্পানিসমূহ কর্মী নিয়োগ করতে পারবে। অধিকন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পর অনিয়ন্ত্রিত নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত না রাখার বিষয়ে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কেননা এতে বর্হিবিশ্বে আমাদের দেশের সুনাম নষ্ট হয়েছিল।

৭। এখন থেকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সব নিয়োগ অনুমোদন মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় হতে হবে এবং এতদসংশ্লিষ্ট পদ্ধতি ইতোমধ্যেই নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো ছোট ছোট পদক্ষেপ মনে হলেও এই প্রক্রিয়া ভবিষ্যতে উত্তম ফল দিবে।

৮। সবার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, ইতোমধ্যেই বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ে One Stop Centre চালু করা হয়েছে, যা ইতোপূর্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ছিল। এ নিয়মটি অনেক দেশে বিদ্যমান আছে। মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ে আজ পর্যন্ত ২,৩০,০০০ (দুই লক্ষ ত্রিশ হাজার) কর্মীর নিয়োগ অনুমোদন দিয়েছে (১৫/০৬/২০২২ তারিখ পর্যন্ত)। মালয়েশিয়ার ব্যবসা বাণিজ্য ও শিল্প খাতে বিরাজমান শ্রমিক সংকট সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সব সহকর্মীকে তাদের আন্তরিক ও কঠোর প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমাদের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দানের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রতিশ্রুতি প্রতিপালন করা হবে।

৯। এখন সংশ্লিষ্ট কোম্পানির দায়িত্ব হলো মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত কর্মীদের জন্য লেবি পরিশোধ করা এবং মেডিকেল রিপোর্ট জমাদান পূর্বক ভিসা জোগাড় করা, যাতে কোম্পানিসমূহ আমাদের উদ্যোগের ফল ভোগ করতে পারে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom