প্লট জালিয়াতির মাধ্যমে ‘সম্পদের পাহাড়’ গড়েছেন কাইয়ূম-মনির

প্লট জালিয়াতির মাধ্যমে ‘সম্পদের পাহাড়’ গড়েছেন কাইয়ূম-মনির

প্রথম নিউজ, অনলাইন :   রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বাড্ডা পুনর্বাসন প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্তদের ৭১টি প্লটের নথি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া রাজউকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সিল, সিটি করপোরেশনের ভুয়া প্রত্যয়নপত্র, পর্নো সিডি উদ্ধার করা হয়। ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজউকের অ্যানেক্স ভবনের ৫১৪ নম্বর কক্ষ থেকে রাজউক চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদের নেতৃত্বে পরিচালিত এক অভিযানে নথিগুলো উদ্ধার করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে পরিচালক (প্রশাসন) খন্দকার অলিউর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

জানা যায়, কক্ষটি ১৯৮৬ সলের ১ মার্চ মেসার্স পলি ওভারসিজ প্রাইভেট লিমিটেডের নামে মাসিক ১৫ হাজার ৮২০ টাকা হারে ফজলুল হক নামে একজন বরাদ্দ নেন। এই প্রতিষ্ঠানের নামে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কক্ষটির ভাড়া পরিশোধিত রয়েছে। তার কাছ থেকে কালোর্স ড্রিংকস অ্যান্ড ব্রেভারেজ লি. নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কক্ষটি ভাড়া নেয়। 

প্রতিষ্ঠানটির মালিক এম এ কাইয়ূম। তিনি মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও অখণ্ড ঢাকা সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার ছিলেন। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছেন মনিরুল ইসলাম ওরফে গোল্ডেন মনির। দেশে অবৈধ সোনা আমদানির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। প্লট জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন কাইয়ূম-মনির। তাদের নামে-বেনামে অর্জিত এসব সম্পদের পেছনের কাহিনী মহাকাব্য আরব্য উপন্যাসকেও হার মানাবে।

রাজউক সূত্র জানায়, রাজউকের বাড্ডা প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্তদের নামে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে প্লটগুলো নিজেরা বাগিয়ে নিয়ে তা অন্যদের কাছে বিক্রি করতো তারা। এই দুই ব্যক্তি রাজউকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ফাইলগুলো রাজউকের কেন্দ্রীয় স্টোরে না রেখে তাদের অফিসে রাখতেন। সেখানে কর্মকর্তাদের সিল ও স্বাক্ষর জাল করে ক্ষতিগ্রস্তদের প্লট জালিয়াতির মাধ্যমে দখল করতেন। 

রাজউকের অভিযানের সময় ওই কক্ষে পারভেজ নামে একজন কর্মচারীকে পাওয়া যায়। তিনি জানান, অফিসটি সাবেক কমিশনার কাইয়ূম ও গোল্ডেন মনিরের ছিল। তাদের লোকজন এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। গোল্ডেন মনির সাবেক রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিনের ভাগিনা। তারা বিভিন্নভাবে প্রকল্পের নথিগুলো নিয়ে এসে জালিয়াতির মাধ্যমে জাল কাগজপত্র সাজাতেন। অভিযানে কাউন্সিলর কাইয়ূমের ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত ফাইলও উদ্ধার করা হয়েছে।

রাজউকের কর্মকর্তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্র এভাবে রাজউকের বিভিন্ন ফাইল গায়েব করে ফেলতো। অথচ এই ফাইলগুলো থাকার কথা রাজউকের কেন্দ্রীয় রক্ষণাগারে।

বোদ্ধাজনরা মনে করেন, জালিয়াতির মাস্টারমাইন্ড কাইয়ূমের কারণে বারবার ইমেজ সংকটে পড়ছে বিএনপি। তাই অচিরেই এম এ কাইয়ূমকে বহিষ্কার করে বিএনপি গণমানুষের দল হিসেবে নিজেদের ইমেজকে আরও সুপ্রতিষ্ঠিত করবে।