প্রচলিত সিস্টেমের প্রতিযোগিতায় হেরে গেছে এনসিপি : মারুফ কামাল খান

প্রথম নিউজ, অনলাইন: চলিত রাজনৈতিক সিস্টেমের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ‘আপাতত’ হেরে গেছে বলে মনে করছেন সাংবাদিক, লেখক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশের তরুণ সমাজ এ রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তন চায়, সংস্কার বা বৈপ্লবিক পরিবর্তন চায়, এ প্রচলিত ব্যবস্থা তারা চায় না। আজ একটা প্রতিষ্ঠিত কায়েমি দল ক্ষমতায় আসবে, কিন্তু তারুণ্যের যে ক্ষোভ, এটা ধুমায়িত হবে। তারপর কিছুদিন পর আবার বিদ্রোহ করার চেষ্টা হবে, বিক্ষোভ হবে।
সুতরাং তাদের (তরুণদের) একোমোডেট করতে হবে, তরুণ সমাজকে বাদ দিয়ে কিছু হবে না। আজ এনসিপি ব্যর্থ হতে পারে, কিন্তু এনসিপি যে তারুণ্যের অনুভূতিকে ধারণ করে তার উত্থানটা হয়েছিল, সেই তারুণ্যকে মূল্য দিতে হবে।’
সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেলের টক শো অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মারুফ কামাল খান বলেন, ‘এনসিপি একটা স্ফুলিঙ্গ হিসেবে জ্বলে উঠেছিল, আশাবাদ সৃষ্টি করেছিল।
এখন তাদের কার্যক্রম সেই আশা জীবন্ত রাখতে পারেনি। আপনাকে হয় বিপ্লবী হতে হবে, নাহলে প্রচলিত ধারার রাজনীতি করতে হবে। আপনি পুরো সমাজ ব্যবস্থা, রাজনীতি, রাষ্ট্রব্যবস্থাকে বদলাবেন, তাহলে আপনার চরিত্রকেও বিপ্লবী চরিত্র ধারণ করতে হবে। কিন্তু আপনি যদি বিপ্লবী চরিত্র ধারণ না করে, প্রচলিত কায়েমি চরিত্র নিয়েই যদি এগুলো বদলাবার কথা বলেন, তাহলে এটা হবে না।
'
বিশাল গাড়িবহরে শোভাযাত্রা কিংবা প্রচলিত রাজনীতি ব্যবস্থার সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে এনসিপি হেরে গেছে মন্তব্য করে মারুফ কামাল বলেন, ‘যখন খুব দ্রুত ইলেকশনের রাজনীতি চলে আসছে, তারা মনে করেছে ইলেকশনের জন্য অর্থ দরকার। আমাকে একটা বড় প্রার্থীর সঙ্গে, যে প্রার্থী ১০ কোটি টাকা নিয়ে নির্বাচনে নামবে, তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। তাহলে তাকেও টাকা নিয়ে আসতে হবে, বৈধ বা অবৈধ যেভাবেই হোক। তাকে নির্বাচন করতে হবে, রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে, দলকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, এরপর একটা প্রচলিত ব্যবস্থার সঙ্গে তার কম্পিট (প্রতিযোগিতা) করতে হচ্ছে, যখন বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি বা প্রচলিত দলের প্রার্থী এলাকায় যাচ্ছে, সে বিশাল গাড়ির বহর নিয়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে ২০০ গাড়ি যাচ্ছে, হাজারো কর্মী মোটরসাইকেলে যাচ্ছে, শোভাযাত্রা করে যাচ্ছে।
চলমান যে ট্রেডিশন, তারা (এনসিপি) ঠেলাগাড়িতে গেলে, তাদের দিকে কেউ তাকাবে না, তারাও চিন্তা করছে আমাদেরও এসব জৌলুস দেখাতে হবে। সেটা করতে গেছে, মানুষ বলছে— আরে তাহলে একে কেন আমি নির্বাচিত করব? ওই লোকটাকে আমি চিনি, সে তিনবার এমপি ছিল আমাদের, সে এটা করেছে, ওটা করছে, তাহলে এদের (এনসিপি) আনার দরকার কী? এ যে তারা প্রচলিত সিস্টেমের সঙ্গে কম্পিট করতে গেছে, আমার কাছে মনে হয়েছে, সেই কম্পিটে তারা আপাতত হেরে গেছে।
‘তরুণ সমাজ রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তন চায়, সংস্কার চায়, তারা প্রচলিত ব্যবস্থা চায় না’––উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, তারুণ্যকে রিপ্রেজেন্ট করেই তাদের উত্থানটা হয়েছে। একটা সফল বিপ্লব তারা করেছে। তাদের মানুষ সাপোর্ট করেছে, সমস্ত রাজনৈতিক দল, সমস্ত শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের সাপোর্ট করেছে। তাদের কেন্দ্র করে সবাই এসে আবর্তিত হয়েছে।