প্রকাশ্যে কালিয়াকৈরে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
কলেজের র্যাগ-ডে পালনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের দুপক্ষের ধাওয়া-পালটাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
প্রথম নিউজ, যশোর: কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা আল আমিন হোসাইনকে বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কলেজের র্যাগ-ডে পালনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের দুপক্ষের ধাওয়া-পালটাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে চন্দ্রা মোকদ্দম প্লাজার সামনে আল আমিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আর এ হত্যার অভিযোগ উঠেছে কালিয়াকৈর পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ সময় আল আমিনের সহযোগী কামরুল হাসান রবিন গুরুতর আহত হয়েছেন।
নিহত আল আমিন কালিয়াকৈর উপজেলার বরিয়াবহ গ্রামের মোতালেব মিয়ার ছেলে। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কলেজের ডিগ্রি প্রথমবর্ষের ছাত্র এবং কলেজ শাখা ছাত্রলীগের দ্বাদশ শ্রেণির সভাপতি ও শ্রীফলতলী ৯নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ জানায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজে বুধবার কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদ কামাল ওরফে সোহানের নেতৃত্বে উচ্চ মাধ্যমিক পুরাতন দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা র্যাগ-ডে পালন করেন। র্যাগ-ডে অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল প্রভাষক আবু হেনা সাজেদুল আলম ও আবুল কালাম আজাদসহ কয়েকজন শিক্ষককে।
অনুষ্ঠানে শতাধিক মোটরসাইকেলে মহড়া দেয় সোহান ও তার সহযোগীরা। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে ওই কলেজের ডিগ্রি তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি ও কলেজের ডিগ্রি তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী ইমন খান, তার সহযোগী সাকিব হৃদয়, আকাশ ও হাসানসহ ১০-১২ শিক্ষার্থী কলেজ মাঠে ডিগ্রি প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী আল আমিন হোসাইন ও কামরুলকে ধাওয়া করেন।
এ সময় তারা দুজনে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে তারা বঙ্গবন্ধু কলেজের পশ্চিম পাশে ডাইনকিনি সড়কে মখদুম মোকদ্দম প্লাজার সামনে গিয়ে মাটিতে পড়ে গেলে হামলাকারীরা তাদের মারধর ও কুপিয়ে জখম করে। পরে লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় তাদের কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আলা আমিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুফিয়া বেগম বলেন, শিক্ষার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে তাদের বিদায় অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কোনো ধরনের র্যাগ-ডে পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। সেই অনুষ্ঠানে কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। অনুষ্ঠানে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনার জের ধরেই আজ একটি পক্ষ কলেজের এক ছাত্রকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে। এছাড়া এক ছাত্র আহত হয়েছে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম নাসিম বলেছেন, যারা এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।