পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১০-এর নিচে, দুর্ভোগ কমেনি জনজীবনে

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১০-এর নিচে, দুর্ভোগ কমেনি জনজীবনে

প্রথম নিউজ, পঞ্চগড়: সারাদেশের ন্যায় সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়েও টানা একসপ্তাহ থেকে তীব্র শীত। হিমালয়ের হিমেল হাওয়ায় হাড়কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষ ও জীবজন্তু। জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশায় ঢাকা পুরো জেলা। কুয়াশার সঙ্গে ঝরছে হিমশীতল শিশির। শহর ও গ্রামের সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। টানা শীতের কারণে চরম বিপাকে সময় পার করছে শিশু ও বৃদ্ধরা। শীতের কারণে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগ। কুয়াশার কারণে সময়মতো কাজে যেতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। শীত ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে কমেছে আয়। অভাব-অনটনে দিন কাটছে অনেক পরিবারের। প্রয়োজনের বাইরে শহরের অভিজাত মানুষজন ঘর থেকে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে নিম্ন আয়ের মানুষের শীত উপেক্ষা করেই কাজে যেতে হচ্ছে।

পাথর শ্রমিক আবু তাহের জানান, টানা শীতে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছেন তিনি। জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই দিনভর নদীতে বরফগলা পানিতে পাথর তুলতে হচ্ছে তার। জীবিকার অন্য কোনো পথ না থাকায় ঠান্ডা পানিতে কাজ করে পরিবারের খাবারের জোগান দিচ্ছেন। 


বাংলাবান্ধায় পাথর শ্রমিকের কাজ করেন ফিরোজা ও কদবানু। তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, নদীতে পাথর উঠছে কম। তাই তাদের কাজও কম। সকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে কাজে যেতে দেরি হলে অনেক সময় মহাজন কাজে নিতে চান না। কাজ না করলে তাদের পরিবার চলে না। তাই এই ঠান্ডার মধ্যে বেরিয়েছেন কাজের জন্য।

জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, গত দুই দিন ধরে এ জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন এ জনপদ। গতকাল বেলা ১১টার সময় সূর্যের মুখ দেখা গিয়েছিল। তবে সূর্যের সামান্য তাপেও ঠান্ডা কমেনি।

জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, শীতপ্রবণ জেলা হিসেবে প্রতি বছর পঞ্চগড়ে সরকারি-বেসরকারিভাবে পর্যাপ্ত কম্বল বিতরণ করা হয়। এবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে।