নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০৯

ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০৯
প্রথম নিউজ, অনলাইন: ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুক্রবার (২৬ জুলাই) একজন ও আগের দিন বৃহস্পতিবার আরও একজন মারা গেছেন। আর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপরজনের মৃত্যু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে। মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন ইমতিয়াজ আহমেদ (২১), মো. মাইনুদ্দীন ও ইয়াছিন (১৭)।
ইমতিয়াজ আহমেদ গতকাল শুক্রবার ভোর চারটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এক সপ্তাহ আগে ১৯ জুলাই রামপুরার বনশ্রী এলাকায় কোমরের নিচের অংশে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। সেদিন জুমার নামাজ শেষে মেসে ফেরার কিছুক্ষণ পর দুপুরের খাবার খেতে নিচে গিয়েছিলেন তিনি। ইমতিয়াজ তেজগাঁও এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছার দেউলী গ্রামে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তির নাম মো. মাইনুদ্দীন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে মাইনুদ্দীন মারা যান। ২১ জুলাই দুপুরের পর বাসায় ফেরার পথে যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকায় পিঠে ও গলায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। স্বজনেরা জানান, মাইনুদ্দীন স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করতেন। এক বছর আগে তার বিয়ে হয়েছিল।
গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত করা হয় ইয়াছিনের। সে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকার বাসিন্দা ছিল। ২১ জুলাই শনির আখড়ায় সংঘর্ষ চলাকালে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়। গত বৃহস্পতিবার মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় বলে জানান নিহতের স্বজন বাবুল হালদার। ইয়াছিন গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানে কাজ করত। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার রূপসায়।
এই তিনজন ছাড়াও মৃত্যুর এ তালিকায় নোয়াখালীর আরও দুজনের নাম অন্তর্ভুক্ত হবে। তাদের মৃত্যুর খবর আগে পাওয়া যায়নি। তাদের একজন মাহমুদুল হাসান ওরফে রিজভী (২০)। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের চর কৈলাস এলাকায়। থাকতেন রাজধানীর উত্তরায়। স্বজনদের ভাষ্য, ১৮ জুলাই মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। 
অপরজন আহসান হাবিব ওরফে তামিম নিহত হয়েছেন ১৯ জুলাই। তার বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিলে। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ও পরবর্তী সংঘাতে এ নিয়ে ২০৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল। মৃত্যুর এই হিসাব কিছু হাসপাতাল, মরদেহ নিয়ে আসা ব্যক্তি ও স্বজনদের সূত্রে পাওয়া। সব হাসপাতালের চিত্র পাওয়া যায়নি। 
এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১৬ জুলাই ৬ জন, ১৮ জুলাই ৪২ জন, ১৯ জুলাই ৮৫ জন, ২০ জুলাই ৩৮ জন, ২১ জুলাই ২১ জন, ২২ জুলাই ৫ জন, ২৩ জুলাই ৩ জন, ২৪ জুলাই ৩ জন, ২৫ জুলাই ৫ জন এবং গতকাল ২৬ জুলাই ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। 
উল্লেখ্য, গত সোমবার থেকে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত সব মৃত্যু চিকিৎসাধীন অবস্থায় হয়েছে।
মোট নিহত
১৬ জুলাই ৬ জন, ১৮ জুলাই ৪২ জন, ১৯ জুলাই ৮৫ জন, ২০ জুলাই ৩৮ জন, ২১ জুলাই ২১ জন, ২২ জুলাই ৫ জন, ২৩ জুলাই ৩ জন, ২৪ জুলাই ৩ জন, ২৫ জুলাই ৫ জন, ২৬ জুলাই ১ জন।