নলকূপের মালিকানা দ্বন্দ্ব: আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ১৮ কৃষকের অভিযোগ

এ ঘটনায় বুধবার (৭ জুন) উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ১৮ কৃষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

নলকূপের মালিকানা দ্বন্দ্ব: আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ১৮ কৃষকের অভিযোগ

প্রথম নিউজ,পাবনা: সমবায় সমিতির গভীর নলকূপ নিজের বলে দাবি করার অভিযোগ উঠেছে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বুধবার (৭ জুন) উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ১৮ কৃষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ওই কৃষকদের লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ভাঙ্গুড়া উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ও সাধারণ কৃষক তারা। পাথরঘাটা মৌজায় বিএডিসির স্থাপিত গভীর নলকূপের আওতায় তারা দীর্ঘদিন ধরে বোরো ধান চাষ করে আসছিলেন। একপর্যায়ে ২০০৮ সালের দিকে বিএডিসির নলকূপ বন্ধ হয়ে গেলে বোরো ধান চাষের জন্য ২০ জন কৃষক যৌথ উদ্যোগে নিজেদের অর্থায়নে শামীম আহমেদের জমিতে গভীর নলকূপ স্থাপন করেন।

নলকূপটির বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয় তাদের সমিতিভুক্ত চাষি নাসির উদ্দিনের নামে। ওই কৃষকদের অর্থে পানি সরবরাহের পাইপলাইনও স্থাপন করা হয়। গত বছরের শেষেরদিকে নাসির উদ্দিন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আবেদন করে সমিতির সদস্য পদ প্রত্যাহার করে নেন। তখন সমিতির রেজুলেশনসহ অন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে উপজেলা সেচ কমিটি ও পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে আবেদন করে অভিযুক্ত শামীম আহমেদের নামে নতুন করে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে সেচ প্রকল্প চালু হলে শামীম আহমেদ নলকূপটি তার ব্যক্তি মালিকানাধীন বলে দাবি করেন। তিনি সমিতিভুক্ত ৯ সদস্যকে বহিষ্কারও করেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সুরাহা হয়।

এদিকে, গত সপ্তাহে শামীম আহমেদ নলকূপটি আবার নিজের ব্যক্তিগত বলে ঘোষণা দেন। কারণ হিসেবে তিনি জানান, বিএডিসি ভাঙ্গুড়া অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইয়াকুব আলী এই গভীর নলকূপটি শামীম আহমেদের ব্যক্তিগত বলে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে প্রত্যয়ন দিয়েছেন।

অভিযোগ চাষিরা উল্লেখ করেন, বিএডিসি কর্মকর্তা ইয়াকুব আলী অনৈতিকভাবে এই প্রত্যয়ন দিয়েছেন। এতে শামীম আহমেদ বেপরোয়া হয়ে অন্য অংশীদারদের হুমকি দিচ্ছেন। তারা জানান, নলকূপটি স্থাপনের সময় দেড়শ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা লিখে সব সদস্যদের সই নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময় মিটিং ও রেজুলেশন রয়েছে। এ ঘটনায় তারা ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে একটু ভুলবোঝাবুঝি হয়েছে। নিজেরা বসে বিষয়টি সমাধান করা যেত। কিন্তু কয়েকজন চাষি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এখন সে অনুযায়ী সমাধান হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাহিদ হাসান খান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।