দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: ‘মাছ-মাংসের দাম বেশি তাই ডিম কিনি, তাও ৫৫ টাকা হালি’

ফেনীর সোনাগাজীতে ডিম কিনতে এসে কথাগুলো বলছিলেন রিকশাচালক আকবর হোসেন।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: ‘মাছ-মাংসের দাম বেশি তাই ডিম কিনি, তাও ৫৫ টাকা হালি’

প্রথম নিউজ, ফেনী: ‘বাজারে মাছ-মাংসের দাম বেশি। এজন্য কিছুদিন ধরে মাছ-মাংস বাদ দিয়ে ডিম কিনছি। মাঝে মধ্যে বাড়িতে ছেলেমেয়েদের মাংসের আবদার থাকে। তবে দামের সঙ্গে আয়ের মিল না থাকায় ডিম কিনতে হয়। আজও ডিম কিনতে এসেছি। সেই ডিমও ৫৫ টাকা হালি।’

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) ফেনীর সোনাগাজীতে ডিম কিনতে এসে কথাগুলো বলছিলেন রিকশাচালক আকবর হোসেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারিভাবে দাম বেঁধে দেওয়ার পরও ফেনীর সোনাগাজীতে ডিমের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত দুইমাস ধরে খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে হাঁসের ডিমের দাম হালিতে ১৬-২০ টাকা বেড়েছে। মুরগির ডিমে বেড়েছে ১০-১২ টাকা। খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, শ্রমিকের মজুরি ও উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ডিমের দাম বেড়েছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ী ও খামারিরা।

সোনাগাজী পৌর বাজার, ওলামা বাজার, বক্তারমুন্সি বাজার, কাজীরহাট, কুঠিরহাট, মতিগঞ্জ ও সোনাপুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ আগে পাইকারি পর্যায়ে মুরগির ডিম প্রতি হালি ৪৮ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন সেই ডিম পাইকারি পর্যায়ে প্রতি হালি ৫২ ও মুদি দোকানে খুচরা পর্যায়ে ৫৪- ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫৬ টাকা হালির হাঁসের ডিম খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়।

সোনাগাজী পৌরশহরের ডিমের বাজারে ১০-১২টি আড়ত আছে। পাইকারি এ বাজারে বুধবার (১৮ অক্টোবর) ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি হালি ৫২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি সাদা কক মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি হালি ৫০ টাকা দরে।

অন্যদিকে শহরের মুদি দোকানগুলোতে মুরগির ডিম প্রতি হালি ৫৪-৫৫ টাকা, সাদা ডিম ৫২ টাকা এবং হাঁসের ডিম ৭০-৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আনিসুর রহমান নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, গত সপ্তাহে তিনি এক হালি হাঁসের ডিম কিনেছেন ৬৫ টাকায়। তবে আজ দোকানে গিয়ে দেখেন, সেই ডিম এক লাফে ৭০ টাকা হয়েছে।

ফেনী পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বলেছেন, বড় কোম্পানিগুলোর কাছে স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জিম্মি। ফেনীতে দুই হাজার ডিম উৎপাদনকারী খামার থাকলেও ব্যবসায় লোকসানের কারণে অনেকে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে তিনি মনে করেন, ওষুধ ও খাদ্যের দাম কমলে ডিমের দামও নিয়ন্ত্রণে আসবে।