দুর্নীতিবাজেরা ক্ষমতায় এলে সব উন্নয়ন ধ্বংস করবে: প্রধানমন্ত্রী

শনিবার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন।

দুর্নীতিবাজেরা ক্ষমতায় এলে সব উন্নয়ন ধ্বংস করবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রথম নিউজ, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে আগামী সাধারণ নির্বাচনে তাঁর দলকে আরও একবার সুযোগ দেওয়ার জন্য আজ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দেশবাসীকে স্বাধীনতাবিরোধীদের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যদি দুর্নীতিবাজেরা আবার ক্ষমতায় আসে, তাহলে তারা দেশের সব উন্নয়নকে ধ্বংস করে দেবে। প্রধানমন্ত্রী আজ শনিবার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ। কারণ, তারা বারবার আমাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়েছে এবং তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। আগামী সাধারণ নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। আমি আশা করি, জনগণ বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার আরেকটি সুযোগ দেবে। কারণ, দেশটি ২০২৬ সাল থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করবে। এ লক্ষ্যে আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের পবিত্র দিনে আপনাদের সাথে দেখা করে আমি সত্যিই খুব আনন্দ বোধ করছি। কারণ, আপনারা আমার কাছের প্রিয়জন এবং আত্মার আত্মীয়।’ তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াবহ রাতে মা–বাবা এবং ভাইদের হারানোর পর তিনি এ দেশের জনগণের ভালোবাসা ও স্নেহ পেয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সাল থেকে দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় এবং স্থিতিশীলতার কারণে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এত বড় আর্থসামাজিক অগ্রগতির সাক্ষী হয়ে রয়েছে। কারণ জনগণ ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে পরপর তিনবার আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে বারবার ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসানোর জন্য এবং তাদের সেবা করার সুযোগ দেওয়ায় আমি মহান আল্লাহ ও বাংলাদেশের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

দেশ ও দেশের জনগণকে মায়ের মতো ভালোবাসেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিনি দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের মাধ্যমে সব মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করে সুন্দর ও উন্নত জীবন দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কারণ, এটাই ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক, মহাসড়ক, সেতু, বিশেষ করে পদ্মা সেতুসহ ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়নের কারণে এবারের ঈদযাত্রা সহজ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে।

প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে নিজ নিজ গ্রামে যাওয়া লোকজনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ায় মানুষ এখন গ্রামে গ্রামে আনন্দ উপভোগ করছে।

প্রধানমন্ত্রী প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে এবং গরিব-দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি তাঁর দলের নেতা–কর্মীদেরও জনগণের প্রয়োজনে পাশে থাকার আহ্বান জানান।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যাতে কোনো সংকট সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য প্রধানমন্ত্রী সারা দেশের প্রতিটি আবাদি জমি চাষের আওতায় আনার জন্য দেশবাসীর প্রতি তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের জন্য খাদ্য উৎপাদন করতে হবে এবং উদ্বৃত্ত খাদ্য অন্য দেশে রপ্তানি করতে হবে। আমরা ইতিমধ্যে অন্যান্য দেশে সবজি রপ্তানি শুরু করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী প্রথমে তাঁর দলের নেতা-কর্মী এবং কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীসহ সব শ্রেণি–পেশার সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

পরে শেখ হাসিনা মন্ত্রিপরিষদের সহকর্মী, বিচারক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, বিদেশি কূটনীতিক, সিনিয়র সচিব, সচিব এবং সচিবের সমান পদমর্যাদার বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২০, ২০২১ এবং ২০২২ সালে এই অনুষ্ঠান স্থগিত ছিল।