তিস্তার পানি বেড়ে বন্যার শঙ্কা

ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে উপজেলার নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

তিস্তার পানি বেড়ে বন্যার শঙ্কা

প্রথম নিউজ, রংপুর: ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে উপজেলার নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানি ও খাবার সংকট। ডুবে গেছে উঠতি আমন খেত।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, তিস্তা নদীর উজানে ভারতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বৃহস্পতিবার রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার নোহালী, আলমবিদিতর, কোলকোন্দ, লক্ষ্মীটারী, গজঘণ্টা, মর্ণেয়া, গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। 

বন্যার হাত থেকে বাঁচতে গবাদি পশু নিয়ে নদীর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে অনেক পরিবার। বন্যা পরিস্থিতির কারণে চরাঞ্চলগুলোয় সুপেয় পানি ও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ডুবে গিয়েছে চরাঞ্চলের আমন খেত। এদিকে গতকাল উজানের ঢল কমে যাওয়ায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বিকাল ৩টায় ওই পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ডালিয়া পয়েন্টে পানি কমে এলেও গঙ্গাচড়া উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি।

কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা চরের আব্দুল মান্নান বলেন, হঠাৎ করে রাতের বেলা তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘর-বাড়ি ফেলে গবাদি পশু নিয়ে তিস্তার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। খোলা আকাশের নিচে থাকায় রাতে বৃষ্টির পানিতে পুরো পরিবারের সদস্যরা ভিজে গিয়েছি। ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে, খাবার নেই, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই। আমরা চরম কষ্টে রয়েছি।

লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চর জয়রামওঝার কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, নদী তীরবর্তী এলাকায় আমার আমনের খেত ছিল। পুরোটাই ডুবে গিয়েছে। যদি বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তবে আমনের খেত রক্ষা করা সম্ভব হবে না। লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, গঙ্গাচড়া উপজেলার মধ্যে আমার ইউনিয়ন বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। আমি ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছি। বন্যায় ক্ষতির বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টায় তিস্তার উজানের অংশ সিকিম ও গ্যাংটকে আবার মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে। এতে তিস্তা নদীর পানি পুনরায় বেড়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তিস্তার তীরবর্তী উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাঝে এ বার্তা পৌঁছানো হয়েছে। নদীভাঙন রোধে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom